স্বয়ংক্রিয় মোটরগাড়ির জনপ্রিয়তা পশ্চিমে বাড়ছে দিনে দিনে। কিন্তু স্বভাবতই উৎপাদনকারী বড়ো বড়ো সংস্থাগুলো এখনও সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। বহু গাড়ির যানজটের মুখে এমন গাড়ি যদি পড়ে? চালকও নেই যে নিজের মতো করে দাঁড়াবে কিংবা পাশ কাটাবে অথবা অন্য সিদ্ধান্ত নেবে। ভরসা বলতে গাড়ির নিজস্ব অ্যালগরিদম যা আগে থেকেই ঠিক করে ফিট করা আছে।
রাস্তাঘাটে সাইকেল বাইক চালাতে গেলেও চালককে অনেক সময় দ্বিধায় পড়তে হয়। মুখোমুখি হয়তো কোনও বৃদ্ধ হঠাৎ চলে এসেছেন, পাশ কাটিয়ে অন্যদিকে গেলে সেখানে একজন শিশু। ‘তাহলে ধাক্কাটা কাকে দেব?’ এই নৈতিক প্রশ্নের উত্তর কীভাবে করবে চালকবিহীন একটা গাড়ি?
বিজ্ঞানীরা খতিয়ে দেখে বলছেন, পথ দুর্ঘটনা প্রায়শই সহজ সোজাসাপটা হয় না। প্রত্যেক ক্ষেত্রে অনেক ‘কিন্তু’, ‘যদি’, ‘এটা হলে এড়ানো যেত’ ইত্যাদি প্রসঙ্গ উঠেই আসে। চালকের দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় হয়তো অনেকটা রপ্তও হয়ে যায়। কিন্তু স্বয়ংচালিত গাড়ির সফটওয়্যারে কি বাস্তব দুনিয়ার এতও হরেক রকমের সম্ভাব্য ঘটনার জন্যে প্রস্তুতি রয়েছে? এই প্রশ্নের কোনও নির্দিষ্ট উত্তর কিন্তু গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোর কাছে এখনও নেই।
কিন্তু সমধানের চেষ্টায় আছেন বিজ্ঞানীরা। জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অফ মিউনিখের গবেষকরা এই প্রথম একটা ‘এথিকাল অ্যালগরিদম’ তৈরি করেছেন। রাস্তায় চলতে থাকা বিভিন্ন মানুষের (যেমন, সাইকেল আরোহী কিংবা ফুটপাথে হেঁটে যাওয়া ব্যক্তি) বিভিন্ন রকমের নড়াচড়ার জন্য কতটা বিপদ হতে পারে সেটারই একটা নকশা।
নেচার পত্রিকার ‘মেশিন ইন্টেলিজেন্স’ বিভাগে প্রকাশিত হল এই গবেষণাপত্র। মুখ্য গবেষক ম্যাক্সিমিলিয়ান গেইস্লিঙ্গার বলছেন, এতদিন অবধি স্বয়ংচালিত গাড়ির ক্ষেত্রে ‘হয় এটা নইলে ওটা’ মডেলেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজটা চলত। কিন্তু বাস্তবে, রাস্তাঘাটে কিন্তু এতও স্পষ্ট কোনও ঠিক বা ভুলের নির্ধারক নেই। বরং নতুন পদ্ধতিতে ঝুঁকির মাত্রা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্লেষণ করে অতিদ্রুত কাজ করতে পারবে চালকবিহীন গাড়ি।