গত সপ্তাহে ইতিহাস গড়ল জাপান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চিন এবং গত বছরে ভারতের পরে চাঁদের মাটিতে সাফল্য পেল আরও এক দেশ। ভারতের পর পঞ্চম দেশ হিসাবে চাঁদে পা রাখল জাপান। পঞ্চম স্থানটিও রইল এশিয়ার দখলেই।
জাপানের চন্দ্রযানটির নাম ‘স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন’ বা স্লিম। এর ডাকনাম দেওয়া হয়েছিল ‘মুন স্নাইপার’, কারণ এর যথার্থ অবতরণ ক্ষমতা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ল্যান্ডারটির অবতরণে কিছু ত্রুটি ছিল। ল্যান্ডাররের সৌর প্যানেলগুলো শক্তি উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়নি। চাঁদের মাটিতে কাজ করার জন্য সৌরশক্তিই ভরসা। জাপানি ল্যান্ডারটিতে সেই সৌরশক্তি ব্যবহারকারী যন্ত্রে ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। অবিলম্বে তা ঠিক করা প্রয়োজন ছিল অন্যথা চন্দ্রাভিযান ব্যর্থ। প্রথমে, ব্যাটারির শক্তিতে চলছে জাপানের ‘স্লিম’। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ব্যাটারি ফুরিয়ে যায়। অবতরণের প্রায় ৩ ঘন্টা পরে, জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, জাক্সা শক্তি সংরক্ষণের জন্য ল্যান্ডারটি বন্ধ করার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আশা ছিল ভবিষ্যতে যদি সূর্যের আলো স্লিমের সোলার প্যানেলে আঘাত করে, তবে এটি জেগে উঠবে এবং পুনরায় কাজ শুরু করার জন্য প্রস্তুত হবে। এই অল্প সময়ের মধ্যে চাঁদের মাটি থেকে কিছু ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠানোর চেষ্টা চালানো হয়েছে। স্লিম বন্ধ হওয়ার আগে এর দুটি পেলোড, LEV-1 এবং LEV-2 উভয়ই চাঁদের চারপাশে ঘোরাফেরা করছিল। জাপানের মুন ল্যান্ডার যেখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য উল্টে বসে আছে, সেখানকার চন্দ্র পৃষ্ঠের প্রথম ছবি পাঠিয়েছে সে। মাল্টি-ব্যান্ড ক্যামেরার (এমবিসি) মাধ্যমে তোলা এই ছবিতে খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে ধূসর, ধ্বংসস্তূপে আবৃত চাঁদের মাটি। ক্যামেরাটি স্ক্যান করা বন্ধ করে ফেলার কারণে ছবিটি অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সা অবশ্য জানিয়েছে, এই অভিযানকে তারা সফল বলেই ধরছে। চাঁদের মাটিতে তারা সফল ভাবেই মহাকাশযান নামিয়েছে যদিও সৌরশক্তির অভাবে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে তথ্য অনুসন্ধান করতে পারেনি তাদের মহাকাশযান। কিন্তু বিশ্বে পঞ্চম দেশ হিসাবে জাপানের চাঁদের মাটি ছোঁয়ার গরিমা ম্লান হবে না।