থাকার কথা ছিল মাটি। কিন্তু যে টিউবে তা রাখার কথা ছিল, তা বার বার পরীক্ষা দেখা গেল, ওমা এতো ফাঁকা। সম্প্রতি এমনটাই হয়েছে নাসার মঙ্গলযানের ক্ষেত্রে। নাসার উদ্যোগে মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশ্যে ওই মহাকাশ যানটি রওনা দেয় গত বছর জুলাই মাসে, আর এ বছর ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলের ‘মাটি’ স্পর্শ করে সেই যানে করে পৌঁছনো ছোট আকারের যন্ত্রগাড়ি পারসিভের্যান্স।
মঙ্গলের আবহাওয়া, ভূতাত্বিক উপাদান ইত্যাদি নানা ধরনের বিষয় বিশ্লেষণ করাই তার কাজ। মঙ্গলের বুকে অতীতে কখনও প্রাণের উদ্ভব ঘটেছিলে কি না, সে ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানোও তার আর এক কাজ। আর গত দীর্ঘ ছ’মাস ধরে মঙ্গলের জেজেরো গিরিখাতের আশেপাশে ঘুরে বেড়ানো এই যান গত ৬ই আগস্ট প্রথমবার সেই গ্রহের বুকে গর্ত খোঁড়ে। উদ্দেশ্য, মঙ্গলের মাটি সংগ্রহ করা। সে কাজটা ঠিকই করেছিল, এরপর নমুনাটাকে টিউবে ভরে সিল করে যন্ত্রযানের ভেতরেই রাখার কথা, যাতে পৃথিবী থেকে পরবর্তী মহাকাশযান গিয়ে পারসিভের্যান্সকে নিয়ে এলে ওই নমুনাও বিজ্ঞানীদের হাতে আসে। কিন্তু নমুনাভর্তি টিউবটিকে যখন পৃথিবী থেকে বিজ্ঞানীরা দেখতে চাইলেন, তাঁরা অবাক। টিউবের ভেতর পুরো ফাঁকা! অনুমান, রোভারটি (অর্থাৎ যন্ত্রযানটি) যখন যান্ত্রিক হাত দিয়ে গর্ত খুঁড়ে টিউবে পাথুরে নমুনা ভরতে যায়, তখন ওই টিউবে কোনও কারণে শুধু গুঁড়োজাতীয় পদার্থ ঢুকে যায়, যা পরে টিউব থেকে বেরিয়ে আসে।
তবে হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। ওই যন্ত্রযানে আরও ৪৩টা ওরকম টিউব রয়েছে। পরের মাসে ও আবার মঙ্গলের মাটি খুঁড়ে নমুনা সংগ্রহের চেষ্টা করবে, যা পৃথিবীতে আনতে পারলে চাঁদের পাথর আসবার পর দ্বিতীয় কোনও মহাজাগতিক স্থানের নমুনা পৃথিবীতে আসবার কৃতিত্ব অর্জন করবে। সে হবে এক ঐতিহাসিক ঘটনা। আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া আর কাজ কী?