জাতিগত বৈষম্য এবং পক্ষপাতমূলক আচরণ দুই বেদনাদায়ক বাস্তবতা এবং প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হিসাবে স্বীকৃত। কলম্বিয়া, ইয়েল এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের শিশু হাসপাতালের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা অনুসারে, এই চাপযুক্ত অভিজ্ঞতা গর্ভাবস্থায় মার থেকে সন্তানের কাছে প্রেরিত হয় এবং শিশুদের মস্তিষ্কের সার্কিটকে প্রভাবিত করে। গবেষণায় এমন শিশুদের মস্তিষ্কের পরিবর্তন পাওয়া গেছে যাদের মায়েরা গর্ভাবস্থায় নতুন সংস্কৃতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে না পারার কারণে মানসিক চাপ অনুভব করেন। এই পরিবর্তনের কারণে তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং মানসিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এমন কথাই বলেছেন গবেষণার প্রধান লেখক মারিসা স্প্যান, যিনি কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির মনোরোগ বিভাগের অধ্যাপক। স্প্যান এবং সহকর্মীদের পূর্ববর্তী গবেষণা শিশু মস্তিষ্কের উপর গর্ভাবস্থায় যন্ত্রণার বিভিন্ন প্রকারের প্রভাব নথিভুক্ত করেছে- বিষণ্নতা, চাপ এবং উদ্বেগ। নতুন গবেষণায়, গবেষকরা ১৬৫জন মহিলার তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। তথ্যগুলো বৈষম্য, সাধারণ চাপ, শৈশব ট্রমা, বিষণ্নতা এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিমাপের সাথে অন্তর্ভুক্ত ছিল। তথ্যের বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে বৈষম্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গে মানাতে না পারার কারণে যে চাপের উদ্ভব হয় তা আলাদা এবং এগুলো অন্যান্য ধরনের চাপ থেকে আলাদা এবং মস্তিষ্কের উপর স্বতন্ত্র প্রভাব ফেলতে পারে। অ্যামিগডালা হল মস্তিষ্কের একটি অংশ যা মানসিক আবেগ প্রক্রিয়াকরণের সাথে যুক্ত। অ্যামিগডালা গর্ভাবস্থায় অন্যান্য ধরনের মানসিক চাপের প্রতি খুবই সংবেদনশীল এবং নতুন গবেষণা থেকে জানা যায় যে বৈষম্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গে মানাতে না পারার অভিজ্ঞতাও অ্যামিগডালা সার্কিট্রিকে প্রভাবিত করে, সম্ভাব্য প্রজন্ম জুড়ে। আমরা মানুষের সাথে কীভাবে ব্যবহার করি বা কথা বলি তা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়, কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় যেখানে আমরা শিশুদের উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব দেখতে পারি। স্প্যান আরও বলেন যে জৈবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পিতামাতা থেকে সন্তানদের ওপর প্রতিকূলতার অভিজ্ঞতা সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে তা অনুসন্ধান করার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।