নতুন গবেষণা অনুসারে মায়োসিন যুগের ঘন বন থেকে খোলা সমভূমিতে স্থানান্তরের জন্য প্রাচীন হোমিনিডরা স্বরবর্ণভিত্তিক উচ্চারণ থেকে ব্যঞ্জনবর্ণ-ভিত্তিক উচ্চারণে স্থানান্তরিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের গবেষকরা রেকর্ড করা ওরাং ওটাং-এর ডাকের অ্যাকোস্টিক বৈশিষ্ট্যগুলি পর্যবেক্ষণ করেছেন, যা প্রাথমিক মানুষের শব্দের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে তারা মনে করেছেন। পরিবেশ কীভাবে আমাদের পূর্বপুরুষদের কথা বলার ক্ষমতাকে গঠন করেছে তা অধ্যয়নের জন্য আফ্রিকান সাভানা জুড়ে গবেষণা করা হয়েছে। তাদের গবেষণা পরামর্শ দেয় যে আমাদের হোমিনিড পূর্বপুরুষরা রূপান্তরিত পরিবেশে কার্যকরভাবে যোগাযোগ করার জন্য প্রোটো-ব্যঞ্জনবর্ণ ব্যবহার করেছে। দলটি তাদের প্রকাশিত গবেষণাপত্রে জানিয়েছেন মানব পূর্বপুরুষদের বাস্তুতন্ত্রের পরিবেশের পরিপ্রেক্ষিতে পূর্বে স্বীকৃত ভাষার তুলনায় কথ্য ভাষার উত্থান এবং শব্দের আকারের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
গবেষকরা ২০ টি বন্য সুমাত্রান (পঙ্গো অ্যাবেলি) এবং বোর্নিয়ান ওরাং ওটাঙের ৪৮৭ টি ডাকের সিলেবলের মতো সংমিশ্রণ আর্কাইভ রেকর্ডিং ব্যবহার করেছেন এবং সেগুলি দক্ষিণ আফ্রিকার সাভানা আবাসস্থল জুড়ে পুনরায় প্লে করেছেন। বিভিন্ন দূরত্বে কলের শ্রবণযোগ্যতা নির্ধারণ করার জন্য, ২৫ মিটার দূরত্বব্যাপী ৪০০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত পুনরায় রেকর্ড করা হয়েছিল। গবেষকরা র শব্দে a’ এবং e’-এর মতো স্বরবর্ণ-সদৃশ ডাকগুলির আওয়াজ দেখেছেন, যা b’ এবং d’-এর মতো ব্যঞ্জনবর্ণ-সদৃশ ডাকের মতো ভালোভাবে শোনা যায় না। স্বর-ভিত্তিক ডাকগুলি ১২৫ মিটারের পরে ব্যঞ্জনবর্ণ-ভিত্তিক ডাকগুলির তুলনায় অনেক কম শ্রবণযোগ্য ছিল, আর ব্যঞ্জনবর্ণ-ভিত্তিক ডাকগুলি ২৫০ মিটারের পরে শ্রবণযোগ্যতায় সামান্য হ্রাস দেখায়। ৪০০ মিটার দূরত্বে, প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যঞ্জনবর্ণ-ভিত্তিক ডাক শোনা যায়, যেখানে স্বরবর্ণ-ভিত্তিক ডাক ২০ শতাংশেরও কম শোনা যায়। এটি ইঙ্গিত দেয় যে খোলা জমিতে ছড়িয়ে পড়ার সময় ব্যঞ্জনবর্ণের উপর ভিত্তি করে ডাকগুলি যথেষ্ট ভালোভাবে শোনা যায়।
যখন ঘন বন ছিল, তখন স্বর ও ব্যঞ্জন উভয় ডাক সমান ভাবে শোনা যেত। কিন্তু নতুন উদীয়মান শুষ্ক এবং উন্মুক্ত ঘাসের প্রান্তরে মধ্য ও দীর্ঘ দূরত্বে ব্যঞ্জনবর্ণের মতো ডাকের উচ্চতর প্রসারণ দেখা যায়। গবেষকদের মতে হোমিনিডদের ভাষার বিকাশে খোলা সমতলভূমি একটা বড়ো ভূমিকা পালন করেছে, যার ফলে আধুনিক ভাষাতে ব্যঞ্জনবর্ণের প্রাধান্য বেশি।