নেচার কম্পিউটেশনাল সায়েন্সে প্রকাশিত ‘ইউসিং সিকোয়েন্সেস অফ লাইফ-ইভেন্টস টু প্রেডিক্ট হিউম্যান লাইভস’ নামে একটি নতুন বৈজ্ঞানিক নিবন্ধে, গবেষকরা life2vec নামে একটি মডেলে ডেনমার্কে বসবাসকারী ৬ মিলিয়ন ডেনের স্বাস্থ্য তথ্য এবং কর্মক্ষেত্রের সাথে সংযুক্তি বিশ্লেষণ করেছেন। মডেলটিকে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রশিক্ষিত করার পরে, অর্থাৎ, তথ্য প্রদানের পরে, নির্ভুলতার সাথে ব্যক্তিত্ব এবং মৃত্যুর সময়ের মতো তথ্যের ভবিষ্যদ্বাণী করেছে৷ ডিটিইউ-এর অধ্যাপক সুনে লেহম্যান বলেছেন যে তারা মৌলিক প্রশ্নের জন্য মডেলটি ব্যবহার করেছেন: অতীতের অবস্থা এবং ঘটনার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতের কোনো ঘটনার কতটা ভবিষ্যদ্বাণী করা যেতে পারে? বৈজ্ঞানিকভাবে, ভবিষ্যদ্বাণীর থেকে গবেষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল কী ধরনের তথ্য এই ধরনের সুনির্দিষ্ট উত্তর প্রদান করতে সক্ষম। Life2vec বিভিন্ন আঙ্গিকে তথ্যের ব্যাখ্যা করে, তার একটি গাণিতিক কাঠামো রয়েছে যা বিভিন্ন তথ্য সংগঠিত করে। মডেলটি নিজেই সিদ্ধান্ত নেয় বিভিন্ন তথ্য যেমন জন্মের সময়, স্কুলে পড়ালেখা, শিক্ষা, বেতন, আবাসন এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য কোথায় রাখতে হবে। লেহম্যানের মতে মানুষের জীবন অনেকটা ঘটনা প্রবাহের মতো, যার একটা ক্রম রয়েছে। ভাষার ক্ষেত্রে একটি বাক্যে যেভাবে অনেকগুলো শব্দ পর পর সাজানো থাকে অনেকটা সেরকম। এই কাজের জন্য AI-তে ট্রান্সফরমার মডেলগুলো ব্যবহার করা হয়, কিন্তু এই পরীক্ষায় জীবনের ঘটনাক্রম অর্থাৎ, মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে ৷
গবেষকরা life2vec মডেল সংক্রান্ত কিছু নৈতিক প্রশ্নের উল্লেখ করেছেন, যেমন সংবেদনশীল তথ্য সংরক্ষণ, গোপনীয়তা এবং তথ্যে পক্ষপাতীত্বর ভূমিকা। গবেষকদের মতে মডেলটি ব্যবহার করার আগে এই চ্যালেঞ্জগুলোকে আরও গভীরভাবে বুঝতে হবে। মডেলটি রাজনৈতিকভাবে আলোচনা এবং মোকাবেলা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি উন্মুক্ত করে৷ জীবনের ঘটনা এবং মানুষের আচরণের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য অনুরূপ প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই প্রযুক্তি সংস্থা ব্যবহার করছে যেমন, সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোতে আমাদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা, অত্যন্ত সঠিকভাবে আমাদের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করা, আমাদের প্রোফাইল ব্যবহার করে আমাদের আচরণের পূর্বাভাস দেওয়া এবং আমাদের প্রভাবিত করা। সুনে লেহম্যানের মতে এই আলোচনাটি গণতান্ত্রিক কথোপকথনের অংশ হওয়া দরকার যাতে আমরা বিবেচনা করতে পারি যে প্রযুক্তি আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে এবং এটি এমন একটি বিকাশ যা আদৌ কাঙ্ক্ষিত কিনা। গবেষকদের মতে, পরবর্তী পদক্ষেপ হল অন্যান্য ধরনের তথ্য, যেমন আমাদের নিজেদের সম্বন্ধে কিছু পাঠ্য বা ছবি বা সামাজিক সংযোগ সম্পর্কে তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা। তথ্যের এই ব্যবহার সামাজিক এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের মধ্যে একটি সম্পূর্ণ নতুন মিথস্ক্রিয়া উন্মুক্ত করে।