কুমড়ো নামটা শুনলে অনেকেই নাক সিঁটকাবেন। যদিও এই খাবার কিন্তু পুষ্টিগুণে ভরপুর। এই সবজি নিয়মিত খেলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সরবরাহ যেমন পর্যাপ্ত থাকে তেমনই হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। কুমড়োতে রয়েছে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের এক বিশাল সম্ভার। কুমড়ো হল ভিটামিন–এ র উৎস যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার জন্য খুবই দরকারী। সাথে সাথে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ত্বকের প্রাণশক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কুমড়োতে প্রায় ৯৪% জল থাকায় ক্যালোরি কম কিন্তু খাদ্যতালিকাগত ফাইবারে সমৃদ্ধ। উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার খেলে সহজে পেট ভরে যায় আবার সম্ভাব্য সামগ্রিক ক্যালোরি গ্রহণ কমাতে পারে। ফলে যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্য কুমড়ো খুব ভালো ডায়েট। কুমড়ো আলফা-ক্যারোটিন, বিটা-ক্যারোটিন এবং বিটা-ক্রিপ্টোক্সানথিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সম্ভাব্য অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধ করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়। হার্টের জন্যও ভালো কুমড়ো। কারণ কুমড়োয় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা কিনা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। কুমড়োর বীজও হেলাফেলার নয় কারণ বীজ কুমড়োর মতোই উপকারী। এর বীজ ম্যাগনেসিয়ামের একটি বড়ো উৎস, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সহ বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয়। কুমড়োর উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন-এ র উপস্থিতি শুধুমাত্র দৃষ্টিশক্তিকে ভালো রাখে তা নয় বরং স্বাস্থ্যকর ত্বককেও উন্নীত করে। তাছাড়াও, কুমড়াতে রয়েছে লুটেইন এবং জেক্সানথিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্ষতিকারক ইউভি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে পারে। খাদ্যতালিকায় কুমড়োর উপস্থিতি নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। এর উচ্চ ক্যারোটিনয়েড উপাদান স্তন, পেট, গলা এবং অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসে সাহায্য করে। সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গেছে যে কুমড়া গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কুমড়োতে উপস্থিত যৌগ ইনসুলিনের উৎপাদন বাড়াতে এবং গ্লুকোজ সহনশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে, আর তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী। সুতরাং, পরের বার যখন আপনি কুমড়োর কথা শুনবেন তখন মনে রাখবেন যে এটি খেলে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে আর কুমড়োর গুণাগুণ আজও বিজ্ঞান অন্বেষণ করে চলেছে।