কয়েক মুঠো বনের মাটিতে বিজ্ঞানীরা বিশাল আকারের ভাইরাস আবিষ্কার করেছেন যা আগে কল্পনা করা যায়নি। এই দৈত্যাকার ভাইরাসের কিছু অদ্ভুত উপাঙ্গ এবং অভ্যন্তরীণ কাঠামো রয়েছে যা আগে কখনো দেখা যায়নি এবং এদের বৈচিত্র্যও বিস্ময়কর। ২০১৯ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন থেকে কিছু দূরে, হার্ভার্ড ফরেস্ট থেকে গবেষকরা মাটির নমুনা সংগ্রহ করেন। জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটে ট্রান্সমিশন ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি ব্যবহার করে এই ভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছিল। দেখা গেছে মাটির দলাটি ভাইরাসে পরিপূর্ণ যাদের প্রস্থ ৬৩৫ ন্যানোমিটার। যদিও ভাইরাসগুলো এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত বৃহত্তম ভাইরাসের চেয়ে ছোটো (যা ১৫০০ এনএম চৌড়া) তবে মানুষ সাধারণত যে ভাইরাসগুলোর সম্মুখীন হয় তার থেকে অনেক বড়ো যেমন, কোভিড-19 ভাইরাস যার প্রস্থ ৫০ থেকে ১৪০ এনএম।
এদের মধ্যে এক ধরনের ভাইরাস রয়েছে যাদের উপাঙ্গের মতো গঠন সমান দূরত্বে সাজানো অনেকটা ‘কচ্ছপ’-এর মতো দেখতে। আবার এক ধরনের ভাইরাসের চারপাশে লম্বা টিউব আকারের গঠন রয়েছে যা প্রাচীন গ্রিক পৌরাণিক চিত্রের মেডুসার কথা মনে করিয়ে দেয়, বিজ্ঞানীরা তাই এর নাম দিয়েছেন ‘গর্গন’। ‘হেয়ারকাট’ নামের আরেকটি ভাইরাস বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন যাদের বিভিন্ন আকারের তন্তুর মতো কিছু জিনিস রয়েছে, দেখতে অনেকটা অগোছালো চুলের মাথার মতো। এছাড়াও রয়েছে ‘সুপারনোভা’ নামের ভাইরাস যার ক্যাপসিড শেলের কাছে তন্তুর একটা কুণ্ডলী দেখতে পাওয়া গেছে ও বাইরের দিকে রয়েছে টেণ্ড্রিলের একটা স্তর। অন্যদিকে ‘ক্রিসমাস স্টার’ ভাইরাস অনেকটা তারার মতো দেখতে ও দুটি স্তরের ত্রিভুজাকৃতির শেল দিয়ে তৈরি আর ‘ফ্যালকন’ ভাইরাসে বাজপাখির মতো চঞ্চু রয়েছে। মাইক্রোবায়োলজিস্ট ম্যাথিয়াস ফিশার, ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপিস্ট উলরিক মারসডর্ফ এবং জীববিজ্ঞানী জেফরি ব্লানচার্ডের মতে এই বিবিধ ধরনের ভাইরাসের উৎস এবং গঠন নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন।