ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (IISc), বেঙ্গালুরুর বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের দ্বারা প্রকাশিত সাম্প্রতিক গবেষণাপত্র অনুসারে, ১৯৬৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে কাবেরী নদীর অববাহিকায় প্রায় ১২৮৫০ বর্গ কিমি জমি জুড়ে প্রাকৃতিক গাছপালা হারিয়ে গেছে। কর্ণাটক অববাহিকায় এই প্রাকৃতিক গাছপালা নষ্ট অন্য যেকোনো রাজ্যের চেয়ে অনেক বেশি। এর হারানোর হার কর্ণাটকে তিন-চতুর্থাংশ আর তামিলনাড়ুতে প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। এই বছরগুলিতে প্রাকৃতিক গাছপালার আবরণ প্রায় ৪৬% কমে গেছে তা উল্লেখ করে, এই গবেষণায় বলা হয়েছে ৬১২৩ বর্গ কিমি জুড়ে ঘন গাছপালা ৩৫% হ্রাস পেয়েছে, আর ৬৭২৭ বর্গ কিমি এলাকায় ক্ষয়প্রাপ্ত গাছপালা ৬৩% হ্রাস পেয়েছে।
যে অঞ্চলগুলির বন এই নেতিবাচক পরিবর্তনের শিকার হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ব্রহ্মগিরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, বান্দিপুর জাতীয় উদ্যান, নাগরহোল জাতীয় উদ্যান এবং কাবেরী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ১৯৭৩সালে বানারঘাটা জাতীয় উদ্যানের আর্দ্র পর্ণমোচী বনাঞ্চল, প্রায় ৫০% ছিল, ২০১৫ সালে যে জাতীয় উদ্যান এবং এর পরিবেশ “নৃতাত্ত্বিক চাপ” এর কারণে ২৮.৫% -এ দাঁড়িয়েছে। অববাহিকায় শস্যক্ষেত্রের বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে গবেষণা বলেছে যে তামিলনাড়ুতে, সেচের অধীনে এলাকার পরিমাণ ১৯২৮ সালের ৬৫৫৬ বর্গ মিটার থেকে বেড়ে বর্তমানে ২০২৩৩ বর্গ কিমি হয়েছে, এবং কর্ণাটকের ক্ষেত্রে, এটি ১১৯৩ বর্গ কিমি থেকে বেড়ে ৮৪৯৭ বর্গ কিমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে দুই রাজ্যে জলের চাহিদা বেড়েছে। ভূমি ব্যবহার বিশ্লেষণেও দেখা গেছে যে ৭৩.৫% জলাধারে, কৃষি ও উদ্যানপালন প্রধান কার্যকলাপ হয়ে উঠেছে।
গবেষণাপত্রটি ফসলের “অনুপযুক্ত” প্যাটার্নে চাষ, জলের অপটু ব্যবহার, বেশি জল প্রয়োজন এমন ফসল চাষ, নদীর বালি খনন, এবং জলের নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ হ্রাস সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করেছে যা এই অববাহিকার প্রধান বৈশিষ্ট্য। পরিস্থিতির প্রতিকারের জন্য, এই গবেষণায় প্রাকৃতিক সম্পদের একটি আন্তঃসংযুক্ত ব্যবস্থার সাথে এলাকার সমন্বিত ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছে। জল বেশি লাগে এমন অর্থকরী ফসল, একই ফসলের চাষ এবং ভূগর্ভস্থ জলের অতিরিক্ত ব্যবহারের উপর বিধিনিষেধ জারি করার কথা বলা হয়েছে। দেশীয় প্রজাতি দিয়ে লাগোয়া অঞ্চল সমৃদ্ধকরণ; জৈব চাষের প্রসার; বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন, এবং শিল্প থেকে শূন্য নিষ্কাশন নিশ্চিত করা প্রয়োজন তা এই গবেষণা জানিয়েছে।