সারা বিশ্বে ৪৩০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ শ্রবণশক্তিজনিত ব্যাধিতে আক্রান্ত, যার মধ্যে জন্মগত বধিরতায় ভুগছেন প্রায় ২৬ মিলিয়ন মানুষ। ৬০ শতাংশ শিশুর বধিরতা জেনেটিক কারণে হয়। DFNB9-এর শিশুরা OTOF জিনে মিউটেশন নিয়ে জন্মায় যা ওটোফেরলিন প্রোটিন উৎপাদনে বাধা দেয়। এই প্রোটিন শ্রবণযন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্নিহিত শ্রবণশক্তির জন্য প্রয়োজনীয়।
উত্তরাধিকার সূত্রে বধিরতা দূর করার লক্ষ্যে জিন থেরাপির ক্লিনিকাল ট্রায়াল সফল হয়েছে। ম্যাস আই অ্যান্ড ইয়ার (ম্যাস জেনারেল ব্রিগহাম হেলথ কেয়ার সিস্টেমের সদস্য) এবং সাংহাইয়ের ফুদান ইউনিভার্সিটির চক্ষু ও ইএনটি হাসপাতালের গবেষকদের এই জিন থেরাপির সাহায্যে উভয় কানে চিকিত্সা করে পাঁচটি শিশুর শ্রবণশক্তি পুনরুদ্ধার করা গেছে। শিশুরা কথা উপলব্ধি করতে পারছে এবং শব্দের অবস্থান নির্ধারণ করার ক্ষমতা অর্জন করেছে। বিশ্বে প্রথম ক্লিনিকাল ট্রায়ালে উভয় কানে এই জিন থেরাপি করে দেখা গেছে দুকানে জিন থেরাপি কথা শোনার ক্ষমতা বাড়িয়েছে। এই গবেষণার ফলাফল নেচার মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছিল। গবেষকরা উল্লেখ করেছেন তাদের মূল লক্ষ্য শিশুদের উভয় কানে চিকিত্সা করা যাতে তারা তিন মাত্রায় শব্দ শোনার ক্ষমতা অর্জন করে। এতে তারা যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে আর ড্রাইভিংয়ের মতো সাধারণ দৈনন্দিন কাজ করতে সক্ষম হবে।
গবেষকরা এক বিশেষ, ন্যূনতম অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রোগীদের অভ্যন্তরীণ কানে অ্যাডেনো-ধরনের ভাইরাস (AAV) দ্বারা বাহিত মানব OTOF ট্রান্সজিনের কার্যকরী অনুলিপিগুলো ইনজেকশন দেন। এই চিকিত্সার প্রথম কেস জুলাই ২০২৩ সালে পরিচালিত হয়েছিল। ফলো-আপের সময়, ৩৬টা প্রতিকূল ঘটনা দেখা গেলেও কোনও ডোজ সংক্রান্ত বিষাক্ততা বা গুরুতর ঘটনা ঘটেনি। পাঁচটি শিশুর উভয় কানে শ্রবণশক্তি পুনরুদ্ধার হয়েছে, তারা কথা উপলব্ধি করতে পারছে। এমনকি দুটি শিশু সঙ্গীত উপভোগ করতে পারছে, যা মূলত জটিল শ্রবণ সংকেত। অধ্যয়নের জন্য তোলা ভিডিওতে সঙ্গীতের সাথে তাদের নাচতে দেখা গেছে। অংশগ্রহণকারীদের এখনও পর্যবেক্ষণ করা চলছে। এর আগে গবেষকদের এক কানে করা জিন থেরাপির সফলতা দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে ৬ জন শিশুর মধ্যে ৫ জনের শ্রবণক্ষমতা উন্নত হয়েছিল। বর্তমান গবেষণা চিকিতসার কার্যকারিতা প্রকাশ করেছে বলে গবেষকরা দাবি করেছেন।