কাচের মতো দেখতে কালো রঙের একটা আগ্নেয়শিলা – অবসিডিয়ান। এই পাথরের তৈরি সারিসারি কুঠার। সংখ্যায় ৬০০-র কাছাকাছি। ইথিওপিয়ার মাটি খুঁড়ে পাওয়া এইসব প্রাচীন অস্ত্রশস্ত্র আদিম মানুষের বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণা একশো আশি ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিতে পারে। একসাথে এতগুলো হাতে-ধরা কুড়ুলের আবিষ্কার করে প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন, ‘কুঠার তৈরির কর্মশালা’।
কুঠারের আবিষ্কার মানবসভ্যতার প্রথম বড়ো আবিষ্কারগুলোর মধ্যে একটা। পাথরের টুকরো অন্য পাথর দিয়ে ছেনে কুড়ুল তৈরি হত। কিন্তু সেই সময়কার কুড়ুলে ধরার জন্য কোনও হাতল থাকত না। মূলত ফ্লিন্ট বা পরবর্তী সময়ে অবসিডিয়ান পাথরের তৈরি এই কুড়ুলগুলোর বিশেষ রকম আকৃতি হত।
জীবাশ্মতাত্ত্বিকদের হিসেব অনুযায়ী, আজ থেকে ১.৫ মিলিয়ন বছর আগে প্রথম কুঠার তৈরির প্রমাণ মিলেছে। তানজানিয়ার ওল্ডুভাই জর্জ নামক খননক্ষেত্র থেকে সেগুলো আবিষ্কৃত হয়েছিল। হাতে-ধরা কুঠার ব্যবহারের চল আজ থেকে ৫ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য আর ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছিল। ৪০০০০ বছর আগে অবধিও এইরকম কুড়ুল মানুষের কাজে লাগত, সেই প্রমাণও মিলেছে।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন, কুঠার একটা আশ্চর্য অস্ত্র। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে একই হাতিয়ার পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে এইভাবে ব্যবহৃত হয়নি। যদিও ইথিওপিয়ার এই আবিষ্কারে আরও পোক্ত হল অস্ত্র তৈরির দক্ষতার বিষয়টা। গবেষকদের ধারণা, ওয়ার্কশপের মধ্যে দিয়ে নতুন প্রজন্মকে বা গোষ্ঠীকে শেখানো হত কুড়ুল তৈরির বিদ্যে।