অ্যাবডোমিনাল অ্যাওটিক ক্যালসিফিকেশন (AAC) অর্থাৎ পেটের মধ্য দিয়ে যে মহাধমনী রক্ত সরবরাহ করে সেই ধমনীর দেয়ালে অনেক সময় ক্যালসিয়াম জমা হয় যার ফলে কোনো ব্যক্তির হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো মারাত্মক কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই রোগের ফলে পড়ে গিয়ে শরীরের হাড় ভেঙে যাওয়া বা হাড়ে চিড় ধরা থেকে শুরু করে জীবনের শেষের দিকে স্মৃতিভ্রংশও হতে পারে। সাধারণত, অস্টিওপরোসিস শনাক্ত করতে ব্যবহৃত সাধারণ হাড়ের ঘনত্ব পরিমাপ করার মেশিন স্ক্যানের মাধ্যমে AAC শনাক্ত করা যেতে পারে। কিন্তু স্ক্যানের ছবিগুলো বিশ্লেষণ করার জন্য উচ্চ প্রশিক্ষিত বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন যাদের ৫-১৫ মিনিট সময় লাগে ছবিগুলো বিশ্লেষণ করতে।
এডিথ কোওয়ান ইউনিভার্সিটির (ECU) স্কুল অফ সায়েন্স এবং স্কুল অফ মেডিক্যাল অ্যান্ড হেলথ সায়েন্সের গবেষকরা এমন এক সফ্টওয়্যার তৈরি করেছেন যা অনেক তাড়াতাড়ি, এক দিনে প্রায় ৬০,০০০ ছবি, স্ক্যান করতে পারে। গবেষকদের মতে যেহেতু এই ছবিগুলো এবং তার স্বয়ংক্রিয় স্কোর হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষার সময় দ্রুত এবং সহজে করে ফেলা যেতে পারে, তাই প্রাথমিক কার্ডিওভাসকুলার রোগ শনাক্তকরণ এবং রোগ পর্যবেক্ষণের জন্য ভবিষ্যতে এটি নতুন পদ্ধতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। ECU, WA বিশ্ববিদ্যালয়, মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়, সাউদাম্পটন, ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয়, মার্কাস ইনস্টিটিউট ফর এজিং রিসার্চ এবং হিব্রু সিনিয়র লাইফ হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সহযোগিতায় তথ্যগুলো পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞ এবং গবেষক দলের সফ্টওয়্যার ৫০০০-এরও বেশি ছবি বিশ্লেষণ করে দেখেছে৷ ফলাফল তুলনা করার পরে দেখা গেছে ৮০% ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং সফ্টওয়্যার AAC-র নিম্ন, মাঝারি, বা উচ্চ মাত্রা নিয়ে একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। যদিও মানুষের দেওয়া রিডিংয়ের সঙ্গে তুলনা করলে সফ্টওয়্যারটিকে আরও বেশি নির্ভুল ও উন্নত হতে হবে তবে গবেষকরা ইতিমধ্যে সাম্প্রতিক সংস্করণগুলো আরও উন্নত করার চেষ্টা করছে। এই স্ফটওয়্যার ব্যবহারের ফলে যে সমস্ত রোগীদের জীবনে ঝুঁকি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে অনেক আগেই জীবনযাত্রায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা যাতে পারে ও পরবর্তী ক্ষেত্রে তাদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে সুবিধে হতে পারে।