উইপিং পিচ গাছের অঙ্কুর ওপরে সূর্যালোকের দিকে যাওয়ার বদলে শিকড়ের মতো নীচের দিকে বৃদ্ধি পায়। কেন এরকম ঘটে? সবসময় দেখা যায় গাছের ডাল ওপরের দিকে বাড়ে আর শিকড় বৃদ্ধি পায় নীচের দিকে। উদ্ভিদের প্রধান বৃদ্ধি হরমোন অক্সিন, কোশ বিভাজন এবং কোশের প্রসারণ, কলার পার্থক্য গঠন করতে সাহায্য করে। এই হরমোন আলো, মাধ্যাকর্ষণ এবং প্যাথোজেনের প্রতিক্রিয়ার মতো বৃদ্ধি এবং গাছের বিকাশের প্রক্রিয়াগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। অক্সিনের অবস্থানের ওপর গাছের বৃদ্ধির দিক স্থির হয়। প্ল্যান্ট ফিজিওলজি- তে প্রকাশিত এক গবেষণা জানাচ্ছে উইপিং পিচ গাছের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কেন এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়? এই গবেষণায় WEEP নামক এক প্রোটিন, শনাক্ত করা হয়েছে, যে প্রোটিনের অনুপস্থিতিতে উইপিং পিচ ট্রির মতো গাছে অক্সিন নামক গাছের বৃদ্ধি হরমোন পরিবর্তিত হওয়ার কারণে অঙ্কুর নিচের দিকে বৃদ্ধি পায়। WEEP প্রোটিন অক্সিনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষকদের ফলাফল দেখায় শুধুমাত্র একটা জিনে একটা ডিএনএ মুছে গিয়ে অক্সিন হরমোনের উপস্থিতির স্থান সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়ে যায়, যাতে শেকড়ের মতো গাছের শাখাপ্রশাখা নীচের দিকে বাড়তে থাকে। গবেষকরা জানিয়েছেন, কীভাবে অক্সিন গ্রেডিয়েন্ট তৈরি করা যায় সে বিষয়ে এই গাছের ওপর অধ্যয়ন আলোকপাত করে।
সাধারণ পিচ গাছের শাখার তুলনায়, উইপিং পিচের শাখাগুলোর অঙ্কুরের ডগায় অক্সিন বিতরণ আলাদা থাকে। এর শাখার নীচের দিকের কলার চেয়ে ওপরের দিকের কলাতে অক্সিনের প্রতিক্রিয়া বেশি দেখায় এরকম জিনের বেশি অভিব্যক্তি দেখা যায়। ফলে এই ধরনের পিচ গাছের শাখাগুলোর বৃদ্ধি নিম্নগামী হয়, তার কারণ হল অঙ্কুরের ডগায় অধিক অক্সিনের ঘনত্ব। গাছ কীভাবে শাখার বৃদ্ধির গতিপথ পূর্বনির্ধারিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করে তার সাথে সম্পর্কিত প্রক্রিয়াগুলো অধ্যয়নের মাধ্যমে শনাক্ত করে, গবেষকরা নতুন প্রজনন কৌশল বিকাশের আশা করছেন। যাতে ফলের গাছ সহজে, সাশ্রয়ীভাবে একসাথে এবং সংকীর্ণ সারিতে বসিয়ে ফলন করা সম্ভব হয়, যা ফলের বাগান করার ক্ষেত্রে এক বড়ো পরিবর্তন আনবে।