ব্লাড ব্রেন ব্যারিয়ার হল আমাদের মস্তিষ্কে যে রক্ত জালক পুষ্টি জোগায় তাকে ঘিরে থাকা কোশের একটা স্তর, যা অর্ধভেদ্য পর্দার মতো কাজ করে। এটা মস্তিষ্কের পক্ষে উপকারী শুধুমাত্র এমন উপাদানকে মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে দেয়। কিন্তু যখন এই কোশীয় স্তর ঠিকমতো কাজ করেনা তখন বিভিন্ন টক্সিক পদার্থ, রোগজীবাণু মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। এর কিছু উদাহরণ – ক্যানসার কোশ মস্তিষ্কে প্রবেশ করে টিউমারে রূপান্তরিত হতে পারে, SARS-Cov-2 মস্তিষ্কে ঢুকলে মানসিক বিভ্রম সৃষ্টি করে, শ্বেত কণিকা বেশি প্রবেশ করলে অটো ইমিউন রোগ যেমন স্ক্লেরোসিস হতে পারে।
স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির কেলভিন কুয়ো জানান, ব্লাড ব্রেন ব্যারিয়ারের ক্ষতগুলো মেরামত করে রোগ প্রতিরোধ করা বহুদিনের একটা চ্যালেঞ্জ। তিনি ইঁদুরের ব্লাড ব্রেন ব্যারিয়ারের মেরামতির ক্ষেত্রে একটা গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন, যা নেচার কমিউনিকশনে প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে ক্ষতগুলো মেরামত করার জন্য ফ্রিযেল্ড নামে এক ধরনের প্রোটিন রিসেপ্টরের ওপর তারা কাজ করেছেন। এই প্রোটিন, Wnt সংকেতের পথ তৈরি করতে সাহায্য করেছে, যা ক্ষত মেরামত করে, কোশ কলা সৃষ্টি করার পাশাপাশি ব্লাড ব্রেন ব্যারিয়ারের সুস্থতা বজায় রাখে।
তারা L6-F4-2 নামে একটা অণু তৈরি করেছেন, যেটা ফ্রিযেল্ডকে আটকে Wnt সংকেতের পথ অন্যান্য অণুর তুলনায় ১০০ গুণ কার্যকরীভাবে তৈরি করে। এই ইনজেকশন ইঁদুরকে দিলে জিনগত কারণে রেটিনার রক্তজালকের ব্যারিয়ারে ক্ষত তৈরি হয়ে ইঁদুরের যে অন্ধত্ব তৈরি হচ্ছিল, তা দূর করা যাচ্ছে, ইঁদুরের সেরিবেলামে ও রেটিনার ব্যারিয়ার মজবুত হচ্ছে। ইস্কেমিক হার্টের রোগ ও দূর হচ্ছে।
বর্তমানে এই গবেষকরা মানুষের ক্ষেত্রেও এই ওষুধ কীভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে তা নিয়ে গবেষণা করছেন, যাতে স্ট্রোক, ক্যানসার, কোভিডের দীর্ঘকালীন প্রতিক্রিয়া, অ্যালজাইমার্স প্রতিরোধ করা যায়।