একটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র সাধারণ কোশ, যার মধ্যে মাত্র ৪৯৩ টি জিন রয়েছে, তারও পরিব্যক্তি হতে পারে এবং নিজেকে উপযুক্ত করে তোলার জন্য বিবর্তনও হতে পারে – এমনটাই বলেছেন গবেষকরা । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলের গবেষকদের একটি দল এক নতুন গবেষণায় এটাই প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। কোশটি আদৌ বিবর্তিত হতে পারে কিনা তা দেখার জন্য গবেষকরা তার মধ্যে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় জিন রেখে কোশটি আলাদা করে নিয়েছিলেন।
কোশটি মাইকোপ্লাজমা মাইকোয়েডের একটি কৃত্রিম সংস্করণ। মাইকোপ্লাজমা মাইকোয়েড একটি পরজীবী ব্যাকটেরিয়া যা ছাগলের অন্ত্রে এবং অন্যান্য তৃণভোজী জাবরকাটা পশুদের মধ্যে পাওয়া যায়। বেঁচে থাকার জন্য হোস্টের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় সময়ের সাথে সাথে, এই পরজীবী তার অনেকগুলো প্রাথমিক জিন হারিয়ে ফেলেছিল। আজ, এর জিনোমে মাত্র ৯০১টি জিন অবশিষ্ট রয়েছে, যা অন্যান্য অনেক ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির হাজার হাজার জিনের তুলনায় ছোটো।
যখন বিজ্ঞানীরা কৃত্রিমভাবে M. mycoides- এর জিনের আরও ৪১ শতাংশ নির্মূল করেন, শুধুমাত্র সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সিকোয়েন্সগুলি রেখে দেন, তখন তারা যে কোনও জীবের ক্ষুদ্রতম জিনোম সহ একটি মুক্ত-জীবিত কোশ তৈরি করতে সক্ষম হন। ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী জে লেননের মতে কোশকে তার নূন্যতম উপাদান দিলেও কোশের বিবর্তনকে আটকে রাখা যায় না। তিনি এই পরিবর্তিত ব্যাকটেরিয়ার নাম দিয়েছেন M. mycoides JCVI-syn3B। যখন লেনন এবং তার সহকর্মীরা ৩০০ দিনের জন্য পরীক্ষাগারে M. mycoides JCVI-syn3B –এর বৃদ্ধি নিয়ে গবেষণা করেন তারা দেখেন যে এদের পরিব্যক্তির হার অনেক বেশি। আসল M. mycoides-এর তুলনায়, এই নতুন স্ট্রেনটি ৩৯ শতাংশ দ্রুত বাড়ছে, এবং গবেষকরা কৃত্রিমভাবে এর অনেক জিন অপসারণ করা স্বত্বেও এরা এদের হারিয়ে যাওয়া সমস্ত ফিটনেস ফিরে পেয়েছে। গবেষণাটি নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।