মহাশূন্যে তাক করা টেলিস্কোপে চোখ রেখে নিরন্তর একটাই প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন বিজ্ঞানীরা। দেখার চেষ্টা করেন পৃথিবীর বাইরে প্রাণের হদিশ আছে কিনা? জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এক্সোপ্ল্যানেট নিয়ে একটি সম্পূর্ণ নতুন অধ্যায় লিখতে শুরু করেছেন। ‘এক্সোপ্ল্যানেট’ – অর্থাৎ আমাদের সৌরজগতের বাইরের গ্রহ। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ সহ নতুনতম যন্ত্রগুলো কেবল এই দূরবর্তী বিশ্বকে শনাক্ত করছে না, তাদের কিছু বৈশিষ্ট্যও প্রকাশ করছে, যেমন তাদের বায়ুমণ্ডলের গঠন, যা জীবনের সম্ভাব্য উপস্থিতির সূত্র দিতে পারে। এই রকমই খোঁজ করতে করতে মহাকাশবিজ্ঞানীরা অবিকল পৃথিবীর মতো একটা গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন। নাম রেখেছেন “সুপার-আর্থ”। এই এক্সোপ্ল্যানেট একটি লাল রঙের বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। এই ছোটো নক্ষত্রটি আমাদের সূর্যের চেয়ে ছোটো এবং শীতল। বিজ্ঞানীদের অনুমান অনুসারে, এক্সোপ্ল্যানেটটি আমাদের গ্রহের কাছাকাছি রয়েছে- মাত্র ১৩৭ আলোকবর্ষ দূরে। এই সৌরজগতে পৃথিবীর আকারে হয়তো আর একটি দ্বিতীয় গ্রহও থাকতে পারে। TOI-715 b নামক বড়ো গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে প্রায় দেড়গুণ বেশি প্রশস্ত, এবং এমন দূরত্ব রেখে তার লাল নক্ষত্রটিকে প্রদক্ষিণ করে যে সেটি সম্ভবত বাসযোগ্য হতে পারে অর্থাৎ নক্ষত্র থেকে এক্সোপ্ল্যানেটটির দূরত্ব তার পৃষ্ঠে তরল জল তৈরির জন্য সঠিক তাপমাত্রা প্রদান করতে পারে। গ্রহের পৃষ্ঠের জলের উপস্থিতির জন্য, উপযুক্ত বায়ুমণ্ডল থাকার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য কারণও রয়েছে। গ্রহটি ১৯ দিনে একটি সম্পূর্ণ কক্ষপথ শেষ করে। ছোটো গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে সামান্য বড়ো হলেও এটিও গোল্ডিলক জোনে অবস্থিত অর্থাৎ এটিও বাসযোগ্য হতে পারে।
নাসা বলেছে আমাদের সৌরজগতে সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের তুলনায় এই বামন নক্ষত্রটি যেহেতু ছোটো এবং শীতল তাই গ্রহগুলো কাছাকাছি ভিড় করতে পারে এবং নক্ষত্রের বাসযোগ্য অঞ্চলের মধ্যে নিরাপদে ঘুরতে পারে৷ ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট (টিইএস এস) দ্বারা আবিষ্কৃত এই এক্সোপ্ল্যানেটের সংক্ষিপ্ত কক্ষপথের সময়কাল বিজ্ঞানীদের গ্রহটি শনাক্ত করতে এবং অধ্যয়ন করতে সহায়তা করে৷ নাসা তাদের জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ব্যবহার করে TOI-715 b-কে আরও পর্যবেক্ষণ করার পরিকল্পনা করেছে যেমন গ্রহের ভর বা এটিতে “ওয়াটার ওয়ার্ল্ড” বা জলের উপস্থিতি রয়েছে কিনা তা চিহ্নিত করা যাবে কিনা। গ্রহের বৈশিষ্ট্য এর বায়ুমণ্ডল এবং সম্ভাব্য বাসযোগ্যতা বোঝার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ৷