সামুদ্রিক পরিবেশ থেকে বালি ও পলি নিষ্কাশনের উপর একটি নতুন প্ল্যাটফর্মের তথ্য অনুসারে, বিশ্বের সমুদ্রতল থেকে বছরে প্রায় ছ বিলিয়ন টন বালি তুলে নেওয়া হচ্ছে যা সমুদ্রের গভীরে বসবাসকারী প্রাণীদের জন্য বেশ ক্ষতিকারক প্রতিপন্ন হচ্ছে। মেরিন স্যান্ড ওয়াচ নামে এই নতুন তথ্যের প্ল্যাটফর্মটি ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের (ইউএনইপি) অন্তর্গত গ্রিড-জেনেভা দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। প্ল্যাটফর্মটি উত্তর মহাসাগর, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের মতো কিছু নির্দিষ্ট এবং পরিচিত এলাকা সহ বিশ্বের সামুদ্রিক পরিবেশে বালি, কাদামাটি, পলি, নুড়ি ও পাথর খনন করে তুলে নেওয়ার যে ক্ষতিকারক পদ্ধতি রয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করবে। ৫-ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সালে ইউএনইপির দেওয়া এক বিবৃতিতে এমনটাই বলা হয়েছে। যে সমস্ত এলাকা থেকে বালি তোলার কাজ চলে সেই সব অঞ্চল, বালি ব্যবসার বন্দর বা হাব, জাহাজ এবং অপারেটরদের সংখ্যা, এবং যে দেশ থেকে পলি উত্তোলন এবং অন্যান্য ধরনের কাজ চলে তাদের সম্বন্ধে তথ্য সরবরাহ করবে। জাহাজ থেকে স্বয়ংক্রিয় সনাক্তকরণ সিস্টেমের দ্বারা যে সংকেত পাঠানো হয় এবং জাহাজের অপারেশন সনাক্ত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হবে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এটা অনুমান করা হয়েছে যে প্রতি বছর ৪ থেকে ৮ বিলিয়ন টন বালি সমুদ্রের তল থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আরও উদ্বেগজনক যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হল- এই সংখ্যাটি প্রতি বছর ১০ থেকে ১৬ বিলিয়ন টনে বৃদ্ধি পেতে পারে। ভাবনার বিষয় হল উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের কাঠামো এবং কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য ওই পরিমাণ বালি ,পলি, কাদামাটি নদীর বা সমুদ্রের প্রয়োজন। বালি তুলে নেওয়ার ফলে জলের টর্বিডিটি বাড়ে। সামুদ্রিক জীব ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয় কারণ জলে খনিজ দ্রব্যের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং শব্দ দূষণ ঘটে। ইউএনইপির বিবৃতি অনুসারে, কেবল অতল সমুদ্রে বসবাসকারী জীবই নয়, উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে। বিভিন্ন নির্মাণ কার্যের জন্য সমুদ্রের অগভীর অঞ্চলের বালি এবং নুড়ি খনন করে তুলে নেওয়া হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠের ক্রমবর্ধমান উচ্চতা এবং সেই সঙ্গে খনন কার্য উপকূলীয় অঞ্চলে ঝড়ের প্রবণতা বৃদ্ধি করে কারণ উপকূলীয় প্রতিরক্ষার জন্য সামুদ্রিক বালির প্রয়োজন। তাই ইউএনইপি সামুদ্রিক পরিবেশ থেকে বালি উত্তোলনের একটি আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছে।