লোমশ এএসপি শুঁয়োপোকাগুলি দেখলে মনে হয় তারা কারুর কোনো ক্ষতি করে না, দিব্যি হেঁটে চলেছে আপন মনে, কিন্তু এগুলোর বেশি কাছে না যাওয়াই ভালো। এই শুঁয়োপোকাগুলো তাদের শরীরের নরম বহির্ভাগের নীচে, বিষ-ভরা কাঁটার একটি ভয়ঙ্কর সারি লুকিয়ে রাখে। যদিও লার্ভা মথগুলি এক ইঞ্চির চেয়ে একটু বেশি লম্বা হয়, তবে তাদের হুল একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য যথেষ্ট। এই বছর, বিজ্ঞানীরা এই শুঁয়োপোকার শক্তিশালী টক্সিন কীভাবে কাজ করে তা বিশ্লেষণ করেছেন।
জুলাই মাসে প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এএসপি ক্যাটারপিলারের বিষে একটি অস্বাভাবিক, আকৃতি পরিবর্তনকারী প্রোটিন রয়েছে। যখন টক্সিন কোষের বাইরের পৃষ্ঠে পৌঁছায়, তখন এই প্রোটিনটি একটি ডোনাটের মতো আকার গঠন করে, তারপর কোষের প্রাচীরের মধ্য একটি ছিদ্র করে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ই কোলাই এবং সালমোনেল্লার মতো ব্যাকটেরিয়া দ্বারা তৈরি টক্সিন এই একই পদ্ধতিতে কোশে প্রবেশ করে। তাই বিজ্ঞানীদের মতে কিছু ধরনের ব্যাকটেরিয়া তাদের জিনগুলো এএসপি শুঁয়োপোকার DNA-তে অনেক আগেই ঢুকিয়ে দিয়েছিল। তারপর, শুঁয়োপোকাটি একটি প্রাপ্তবয়স্ক মথ হয়ে উঠলে, সে তার এই জিনগুলি বংশধরদের কাছে প্রেরণ করেছিল। ফলে শুঁয়োপোকার মধ্যে এই ক্ষমতা গড়ে উঠেছে।
গবেষণার সহ-লেখক অ্যান্ড্রু ওয়াকার, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আণবিক জীববিজ্ঞানী বলেছেন, শুঁয়োপোকার প্রোটিনের ছিদ্র-পাঞ্চিং প্রকৃতির অনুকরণ করে, ইঞ্জিনিয়াররা ওষুধ সরবরাহের কৌশল তৈরি করতে পারেন। তারা কোশের ভিতরে যেখানে প্রয়োজন সেখানে ওষুধ দিতে পারেন। তারা বলেছেন, এর সুবিধা হল মানব কোশকে নিশানা না করে ক্যান্সার কোশগুলিকে নিশানা করে বা প্যাথোজেন লক্ষ করে এই ধরণের টক্সিনগুলো দেওয়া যেতে পারে, ফলে মানবকোশের ক্ষতি হবে না। অবশ্য এই বিষয়ে সফলতা আসতে আগামী দশ বা বিশ বছর লাগতে পারে, কিন্তু তখন আমাদের শুঁয়োপোকার হুল ফোটানোর ক্ষমতার প্রশংসা করতে হবে।