শতায়ু ব্যক্তি একসময় বিরল বলে বিবেচিত হলেও এখন তাদের সংখ্যা বেশ বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে, তারা বিশ্বের জনসংখ্যার দ্রুততম বর্ধনশীল জনসংখ্যার গোষ্ঠী, ১৯৭০ – এর দশক থেকে প্রতি দশ বছরে তাদের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে। মানুষ কতদিন বাঁচতে পারে, এবং কীভাবে একটি দীর্ঘ এবং স্বাস্থ্যকর জীবন ধারণ করতে পারে, তা বেশ আগ্রহের বিষয়। ব্যতিক্রমী দীর্ঘায়ুর পিছনের রহস্য বোঝা বিশেষ সহজ নয়। জেনেটিক প্রবণতা এবং জীবনধারার সঙ্গে এটা যুক্ত বলে মনে করা হয়।
এই পরীক্ষায় প্রদাহ, বিপাক, লিভার এবং কিডনির কার্যকারিতা, সেইসাথে সম্ভাব্য অপুষ্টি এবং রক্তাল্পতা সম্পর্কিত বারোটি রক্ত-ভিত্তিক বায়োমার্কার অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই সবগুলিই পূর্ববর্তী গবেষণায় বার্ধক্য বা মৃত্যুর সাথে যুক্ত করা হয়েছিল। প্রদাহ সম্পর্কিত বায়োমার্কার ছিল ইউরিক অ্যাসিড যা নির্দিষ্ট খাবারের হজমের ফলে সৃষ্ট শরীরের একটি বর্জ্য পদার্থ। গবেষকরা মোট কলেস্টেরল এবং গ্লুকোজ সহ বিপাকীয় অবস্থা এবং ফাংশনের সাথে যুক্ত মার্কারগুলো , এবং লিভারের কার্যকারিতার সাথে সম্পর্কিত, যেমন অ্যালানাইন অ্যামিনোট্রান্সফেরেজ (অ্যালাট), অ্যাসপার্টেট অ্যামিনোট্রান্সফেরেজ (আসাট), অ্যালবুমিন, গামা-গ্লুটামিল ট্রান্সফারেজ (জিজিটি), ক্ষারীয় ফসফেটেস (আল্প) এবং ল্যাকটেট ডিহাইড্রোজেনেস (এলডি) দেখেছেন। গবেষকরা কিডনির কার্যকারিতার সাথে যুক্ত ক্রিয়েটিনিন এবং আয়রন, মোট আয়রন-বাইন্ডিং ক্ষমতা (TIBC) যা রক্তাল্পতার সাথে যুক্ত, এবং পুষ্টির সাথে যুক্ত অ্যালবুমিন দেখেন।
গবেষকরা বলেন যে সামগ্রিকভাবে, যারা তাদের শততম জন্মদিনে পৌঁছেছেন তাদের ষাট বছর বয়সের পর থেকে রক্তে গ্লুকোজ, ক্রিয়েটিনিন এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কম ছিল। কোন বায়োমার্কারগুলো একশো বছরে পৌঁছানোর সম্ভাবনার সাথে যুক্ত ছিল তা অন্বেষণ করার সময়, গবেষকরা দেখেছেন, ১২ টা বায়োমার্কারের মধ্যে দুটি অ্যালাট এবং অ্যালবুমিন এর ক্ষেত্রে একশো বছরের সাথে সংযোগ আছে। বয়স, লিঙ্গ এবং রোগ থাকা সত্ত্বেও এই দুটোর যোগ ছিল। মোট কোলেস্টেরল এবং উচ্চ স্তরের আয়রনের মাত্রার তুলনায় নিম্ন মাত্রা যাদের তাদের ১০০ বছরে পৌঁছানোর সম্ভাবনা কম ছিল। আবার যাদের উচ্চ মাত্রায় গ্লুকোজ, ক্রিয়েটিনিন, ইউরিক অ্যাসিড তাদেরও শত বছর পর্যন্ত বাঁচার সম্ভাবনা কমে যায়। গবেষকরা মনে করেন বেশিদিন বাঁচার ক্ষেত্রে পুষ্টি এবং অ্যালকোহল গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে কিডনি এবং লিভারের পাশাপাশি গ্লুকোজ এবং ইউরিক অ্যাসিডের উপর নজর রাখা প্রয়োজন।