মানুষের মধ্যে বার্ড ফ্লু-এর সংক্রমণের ঘটনায় WHO উদ্বেগ প্রকাশ করেছে

মানুষের মধ্যে বার্ড ফ্লু-এর সংক্রমণের ঘটনায় WHO উদ্বেগ প্রকাশ করেছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২১ এপ্রিল, ২০২৪

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি মানুষ সহ বিভিন্ন নতুন প্রজাতিতে H5N1 বার্ড ফ্লু-এর ক্রমবর্ধমান বিস্তারের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, আর সঙ্গে এও বলেছে যে এইসব ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক বেশি মৃত্যুর হার লক্ষ্য করা যেতে পারে। বর্তমান বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয় ২০২০ সালে এবং এর ফলে প্রায় এক কোটি হাঁস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণ ঘটেছে বন্য পাখির, স্থল ও সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীর। এই তালিকায় সম্প্রতিকালে যুক্ত হয়েছে গোরু এবং ছাগল আর এই ঘটনাটি বিশেষজ্ঞদের কাছে বেশ আশ্চর্যজনক কারণ এইসব গৃহপালিত প্রাণীকে তারা এই ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য সংবেদনশীল বলে মনে করেননি। বিশেষজ্ঞদের মতে বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক কারণ ভাইরাসটি প্রথমে হাঁস এবং মুরগিদের সংক্রমিত করে এবং তারপর স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে ছড়ায়, এখন বিবর্তিত হয়ে মানুষকে সংক্রামিত করার ক্ষমতা তৈরি করেছে এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে ভাইরাসটির মধ্যে মানুষ থেকে মানুষে সংক্রামণ করার ক্ষমতাও বিকাশ লাভ করতে পারে। এখনও পর্যন্ত, ইনফ্লুয়েঞ্জা A(H5N1) ভাইরাসের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা ভয় পাচ্ছেন, যে সমস্ত ক্ষেত্রে মানুষ প্রাণীদের সংস্পর্শে এসে সংক্রমিত হয়েছে, সেই সব ক্ষেত্রে “মৃত্যুর হার অস্বাভাবিকভাবে বেশি”। WHO-র মতে ২০০৩ সাল থেকে এই বছর এপ্রিল মাস পর্যন্ত ২৩টি দেশে মোট ৮৮৯টি মানুষের মধ্যে ৪৬৩টি মৃত্যুর ঘটনা তারা রেকর্ড করেছে, ফলত মৃত্যুর হার প্রায় ৫২%। এপ্রিল মাসের শুরুতে টেক্সাসের একজন ব্যক্তি প্রথম গোরুর সংস্পর্শে আসার পরে বার্ড ফ্লু-তে আক্রান্ত হন। টেক্সাস, কানসাস এবং অন্যান্য রাজ্যে ভাইরাসটি প্রথম পাখিদের থেকে গোরুর মধ্যে সংক্রমিত হয় তারপর মানুষটির মধ্যে ছড়ায়। WHO বলেছে সংক্রামিত স্তন্যপায়ী প্রাণীর সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে ইনফ্লুয়েঞ্জা A(H5N1) ভাইরাসের স্ট্রেন মানুষটিকে সংক্রামিত করে এবং এটি মানব সংক্রমণের প্রথম ঘটনা। বিশেষজ্ঞদের মতে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটছে কিনা তা বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ সেখানেই ভাইরাসের অভিযোজন ঘটবে। একজন থেকে আর একজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যমেই মানুষের মধ্যে চক্রটি শুরু হবে। H5N1 এর জন্য ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা তৈরির প্রচেষ্টা চলছে। যদি কখনও H5N1 ভাইরাস মানুষের সংস্পর্শে আসে এবং মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ে তবে স্বাস্থ্য পরিষেবা যাতে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে, ভ্যাকসিন ও চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ নিরাময় করতে পারে সে দিকে নজর দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।