যদি আমাদের এই মহাবিশ্বে মহাকর্ষ বল অত্যন্ত শক্তিশালী হত? তাহলে নক্ষত্রের মধ্যে পদার্থের ভাগটা খুবই নগণ্য হত। এতটা বড়ো আকারের নক্ষত্রও সৃষ্টি হত না। তাদের আয়ুষ্কালও সংক্ষিপ্ত হত। কিন্তু সেই পরিস্থিতিতে কি প্রাণের বিকাশ সম্ভব ছিল? উত্তরটা ‘না’। সূর্যের এই নাতিশীতোষ্ণ কিরণে পৃথিবীতে মানুষের বিবর্তন হতেই লেগে গেল কয়েকশো বিলিয়ন বছর।
এবার কল্পনা করা যাক এমন এক মহাবিশ্বের যেখানে মহাকর্ষ বল খুব দুর্বল। তাহলে পদার্থ জোড়া লেগে নক্ষত্রের জন্ম হওয়াটা অসম্ভব হয়ে যেত। এমনকি গ্রহ কিংবা গ্রহের মধ্যে প্রাণ – কোনটাই প্রকাশিত হত না। অর্থাৎ, জীবনের সূচনা আর বিবর্তনের জন্য মহাকর্ষ বলের শক্তি একেবারে ঠিকঠাক।
তবে শুধুমাত্র গ্র্যাভিটির ক্ষেত্রেই বিষয়টা সীমাবদ্ধ থাকে না। আরও নানারকমের দুর্বল আর জোরালো আকর্ষণ বল রয়েছে ব্রহ্মাণ্ডে। বিভিন্ন বলের মান আর কণার মাপজোকের জন্য তিরিশটারও বেশি মৌলিক ধ্রুবকের ব্যবহার আছে পদার্থবিজ্ঞানে, তাদের ফান্ডামেন্টাল কন্সট্যান্টস বলে। প্রত্যেকটাই যেন একেবারে নিখুঁত মানে প্রতিষ্ঠিত যাতে বুদ্ধিমান প্রাণের বিকাশ ঘটে এ মহাবিশ্বে। কিন্তু কেন ওইসব ধ্রুবকের মান ঠিক ততটাই হল? এ নিয়ে কোনও তত্ত্ব নেই। অথচ পদার্থবিজ্ঞানের সমীকরণে নির্দিষ্ট ধ্রুবক নির্দিষ্ট মানে প্রয়োগ করলে নিখুঁত ফলাফল মেলে, তাতে কোনও ব্যত্যয় নেই।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির তাত্ত্বিক পদার্থবিদ পল ডেভিস মন্তব্য করেছেন, বিজ্ঞান এখনও জানে না যে ওই ধ্রুবকগুলো ভেতরে ভেতরে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কিত কিনা। যদি গভীরতর কোনও তত্ত্ব সামনে আসে, তাহলে হয়তো বোঝা যাবে এইসব ধ্রুবক আসলেই পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।