৮ ই জুন, সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে প্রকাশিত হয়েছে পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের বাইরে যখন মহাকাশচারীরা যান, স্বল্প অভিকর্ষজ বলের সাপেক্ষে তাদের মস্তিষ্কের তরল বৃদ্ধি পেয়ে মস্তিষ্ক গহ্বরের প্রসারণ ঘটে। মস্তিষ্কের আবার পুরোনো অবস্থায় ফিরতে অন্তত ৩ বছর সময় লাগে।
মানুষের মস্তিষ্কের কেন্দ্রে চারটে ভেন্ট্রিকল বা গহ্বর আছে যা তরলে পূর্ণ আর সমস্ত অঙ্গকে নরম গদির মতো আশ্রয় দেওয়ার সাথে বর্জ্য নিষ্কাশনও করে। গেইনসভিলের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ বিজ্ঞানী রাচেল সিডলার জানিয়েছেন, মহাকাশে অভিকর্ষজ টান খুব কম থাকায়, মহাকাশচারীদের মাথায় অতিরিক্ত তরল জমা হতে থাকে। তখন মস্তিষ্কের গহ্বর প্রসারিত হয়ে আয়তনে বেড়ে এই অতিরিক্ত তরল ধারণ করে।
মহাকাশ যাত্রার পূর্বে ও পরে ৩০ জন মহাকাশচারীর মস্তিষ্কের MRI করে দেখা গেছে, যত বেশি দিন তারা মহাকাশে থাকছেন, ততই তিনটে গহ্বরের প্রকোষ্ঠ বৃদ্ধি পাচ্ছে, চতুর্থ গহ্বরের আয়তন এত ছোটো যে এই আয়তন বৃদ্ধি বিশেষ বোঝা যায় না। সিডলার বলেছেন, সপ্তাহ দুয়েকের মিশনে মস্তিষ্কে বিশেষ পার্থক্য না হলেও ৬ – ১২ মাস মহাকাশে কাটালে মস্তিষ্ক গহ্বর ১ মিলিমিটারের থেকে একটু কম বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ, যত বেশিদিন মহাকাশে থাকতে হয়, মস্তিষ্কের গহ্বর স্ফীত হতে থাকে। আর দেখা যায়, যাদের দুবার মহাকাশ যাত্রার মধ্যে অন্তত তিন বছরের ব্যবধান ছিল, তাদের মস্তিষ্ক আবার আগের মাপে ফিরে আসতে পেরেছে। তাই মহাকাশচারীদের মহাকাশ যাত্রার মাঝে বেশ কিছুটা ব্যবধান রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
অন্য যে প্রশ্ন উঠে আসছে, তা হল মঙ্গল গ্রহে রকেট পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে, আর সেই নিয়ে বেশ তোড়জোড় চলছে, কিন্তু রকেটের সাথে যে বিষয় নিয়ে ভাবা দরকার, তা হল মঙ্গল গ্রহে যেতে আর ফিরতে দুবছরের মতো সময় লাগবে, সেক্ষেত্রে রকেটযাত্রীদের শরীর তা কীভাবে মানিয়ে নেবে?