নতুন এক গবেষণায় ভারতের মাটির স্বাস্থ্যের এক উদ্বেগজনক দিক প্রকাশ পেয়েছে। গবেষণা অনুসারে, দেশের প্রায় ৩০% ভূখণ্ড অল্প পরিমাণে বা মাইনর মৃত্তিকা ক্ষয়ের সম্মুখীন হচ্ছে, কিন্তু দেশের প্রায় ৩% অঞ্চলের পৃষ্ঠমৃত্তিকা বা টপ সয়েল গুরুতর বা ক্যাটাস্ট্রফিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। পৃষ্ঠ মৃত্তিকা বা টপ সয়েল হল মাটির উপরের স্তর। এই স্তর কৃষির জন্য অত্যাবশ্যক কারণ এটি উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং আর্দ্রতা ধরে রাখে। ক্ষয়ের কারণে উর্বরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায় এবং ফসলের ফলনে ক্ষতি হয়। ভারতবর্ষে মাটি ক্ষয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড়ো হটস্পট হল আসামের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা। বিশ্লেষিত তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে যে উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসামের ৩০০ বর্গ কিলোমিটার পৃষ্ঠের মৃত্তিকা বা প্রায় ৩১% গুরুতর ক্ষতির মুখে রয়েছে।
সুতরাং, উত্তর-পূর্ব রাজ্যের পাশাপাশি সমগ্র ভারতের ক্ষেত্রে মাটির এই ক্ষয়ের মাত্রার অর্থ কী? ইউনাটেড নেশনসের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে, ৬ সেমি গভীরতা বিশিষ্ট ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার পৃষ্ঠের মৃত্তিকার স্তর তৈরি হতে ১০০০ বছর সময় লাগতে পারে। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা ছাড়াও, হিমালয়ের নীচের ঢালু অঞ্চলে রয়েছে মোরাইন বা আলগা মাটি। অঞ্চলটি কাশ্মীর উপত্যকা থেকে হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের দক্ষিণ অবধি বিস্তৃত এবং সীমান্ত পেরিয়ে নেপাল এবং ওড়িশার কিছু অংশও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এই অঞ্চলটি দেশের অন্যতম প্রধান ক্ষয়িষ্ণু অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত এবং এখানে ভূমিকম্পের প্রবণতাও বেশি। হিমালয় এবং ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা থেকে টপোগ্রাফি এবং জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে আলাদা হলেও উড়িষ্যা আর একটি ক্ষয় প্রবণ হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত। এই ক্ষয় মহানদীর দক্ষিণ প্রান্ত থেকে প্রসারিত হয়ে, পশ্চিম সীমানা বরাবর রাজ্যের সবুজ বনভূমি পেরিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত।