গবেষকরা এক বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করেছে যা মানুষের রক্তে আকৃষ্ট হয়। ঠিক রক্তপিপাসু ভ্যাম্পায়ারের মতো, ইংরেজিতে তারা বলছেন ‘ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাম্পারিজম’। রক্তের প্রতি ব্যাকটেরিয়ার এই আকর্ষণ মারাত্মক সংক্রমণের কারণ হতে পারে। ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ওরেগন ইউনিভার্সিটির গবেষকের দল দেখিয়েছেন কীভাবে এই মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া রক্তের তরল অংশ বা সিরাম যা আমাদের পুষ্টি এবং শক্তি সরবরাহ করে তার প্রতি আকর্ষিত হয়। অন্ত্রের রোগ বা ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজে (IBD) আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি বিশেষ সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে কারণ অন্ত্রে রক্তপাতের ফলে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করতে পারে। গবেষকদের মতে যে সব ব্যাকটেরিয়া রক্তপ্রবাহ সংক্রামিত করে তা প্রাণঘাতী হতে পারে। এই সব ব্যাকটেরিয়া সাধারণত রক্ত প্রবাহের একটি রাসায়নিকের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে রক্তের দিকে সাঁতারে যায়। গবেষকরা দেখেছেন তিনটি ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন মানুষের সিরামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে মারাত্মক সংক্রমণের সৃষ্টি করে- সালমোনেলা এন্টারিকা, এসচেরিচিয়া কোলি এবং সিট্রোব্যাক্টর কোসেরি। তাছাড়াও তারা কিছু জৈবিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে চিহ্নিত করেন যে অ্যামিনো অ্যাসিড সেরিন হল সেই রাসায়নিক যা ব্যাকটেরিয়া নির্দিষ্ট প্রোটিন রিসেপ্টরের মাধ্যমে বুঝতে পারে, সন্ধান করতে এবং গ্রাস করতে পারে। এই প্রতিক্রিয়া ঘটতে খুবই অল্প সময় লাগে, পরীক্ষাগারে ঘটনা ঘটতে এক মিনিটেরও কম সময় লেগেছিল। Enterobacteriaceae গোত্রের যে ধরনের ব্যাকটেরিয়া নিয়ে পরীক্ষাগারে কাজ করা হয়েছে তা ইতিমধ্যে অন্ত্রে রক্তপাত এবং সেপসিসের মতো অবস্থার সাথে যুক্ত, বিশেষ করে IBD-র ক্ষেত্রে। কীভাবে ব্যাকটেরিয়া রক্তে সিরামকে অনুভব করে এবং তা ব্যবহার করে- এই ধারণা চিকিত্সাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপন্ন হতে পারে। ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির ইমিউনোলজিস্ট সিয়েনা গ্লেন বলেছেন, এই ব্যাকটেরিয়াগুলো কীভাবে রক্তের উত্স শনাক্ত করতে সক্ষম হয় তার ধারণা ভবিষ্যতে নতুন ওষুধ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। এই ওষুধ আইবিডি আক্রান্ত ব্যক্তি যারা রক্ত প্রবাহের সংক্রমণের জন্য উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের জীবন এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে। গবেষণাটি ইলাইফে প্রকাশিত হয়েছে।