একটা নতুন গবেষণায় নিম্ন মানের বায়ুর সঙ্গে দুবছরের কম বয়সী ভারতীয় শিশুদের দুর্বল মস্তিষ্ক বিকাশের একটা সম্পর্ক পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন না করলে শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ সমূহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
UEA-এর স্কুল অফ সাইকোলজির প্রধান গবেষক অধ্যাপক জন স্পেন্সার বলেছেন, আগে দেখা গেছে খারাপ মানের বায়ু শিশুদের মধ্যে জ্ঞানের ঘাটতি ঘটায়, তাদের মানসিক এবং আচরণগত সমস্যাও হয়, শিশুর পরিবারও এই বাজে প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে৷
তিনি জানান, বায়ুতে ভাসমান খুব ছোটো ছোটো কণা বেশ বিপজ্জনক, কারণ এগুলো শ্বাসনালীর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। যখন শিশুদের মস্তিষ্কের সবচেয়ে দ্রুত হারে বৃদ্ধি হয়, তখন মস্তিষ্কের পক্ষে এই সমস্ত টক্সিক পদার্থ ক্ষতিকর, এই গবেষণা তা প্রথমবার প্রমাণ করেছে।
এর জন্য তারা উত্তর প্রদেশের শিবগড় গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারের সাথে কাজ করে বোঝার চেষ্টা করেছেন, যে বাড়ির ভিতরে ও আশেপাশে নিম্ন মানের বায়ু তাদের সন্তানের বৌদ্ধিক বিকাশের পথে অন্তরায় হচ্ছে কিনা। এই কাজের জন্য তারা বিভিন্ন আর্থ সামাজিক পরিবার নিয়ে কাজ করেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য উত্তর প্রদেশ ভারতের অন্যতম রাজ্য, যেখানে বাতাসে দূষণের মাত্রা খুব বেশি।
এই দল লখনৌর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ল্যাব – যারা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণা ও আবিষ্কার নিয়ে কাজ করে তাদের সাথে যুগ্মভাবে কাজ করেছেন। অক্টোবর ২০১৭ থেকে জুন ২০১৯ অবধি এই দল ২১৫ জন শিশুর চোখে দেখার মাধ্যমে কী কার্যকারী স্মৃতি তৈরি হচ্ছে ও কত তাড়াতাড়ি শিশুদের মস্তিষ্ক দেখা বিষয়টি প্রক্রিয়াজাত করছে তা নিয়ে গবেষণা করেছে।
প্রথমে শিশুদের রঙিন চৌকো ফ্ল্যাশ কার্ড দেখানো হয়, প্রথমে কার্ডের রঙগুলো একই থাকে, যা বারবার দেখানো হয়। তারপর, একটা করে চৌকোর রং পালটে দেখানো হয়। অধ্যাপক স্পেন্সার বলেন, যে শিশুদের পরিচিত জিনিসের থেকে নতুন জিনিস দেখার দিকে প্রবণতা বেশি। তাই এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয়েছে, যে শিশুরা রঙের পরিবর্তন বুঝতে পারছে কিনা, পারলে কতটা বুঝছে, কারণ ক্রমশ বেশি সংখ্যক রঙের চৌকো দেখানো হয়।
এই দল পরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত শিশুদের বাড়িতে কতটা ধোঁয়া নির্গমন হচ্ছে, ও বাতাসের গুণমান কী তাও মেপে দেখেছেন। তারা বলেছেন, রান্নাঘরে কী জ্বালানি ব্যবহার হচ্ছে, তা বাতাসের গুণমান নির্ধারণে বড়ো ভূমিকা নিয়েছে।