প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেলে আমাদের আর নতুন দাঁত গজায় না, তাই আমরা নিজেদের দাঁত যতটা সম্ভব যত্নে রাখতে চাই। বিজ্ঞানীরা এখন এ নিয়ে কাজ করে দাঁত ওঠার ধরনের পরিবর্তন করতে চাইছেন। নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে তাদের কয়েক দশকের গবেষণার ভিত্তিতে সম্ভাব্য নতুন দাঁত ওঠার জন্য চিকিত্সার ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলো ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তারা শুরু করবেন। যদি এই পরীক্ষা সফল হয় তবে ২০৩০ সালের মধ্যে থেরাপিউটিক ওষুধ পাওয়া যেতে পারে।
জাপানের কিটানো হাসপাতালের মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একটি দল অ্যানোডোনটিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ে এই পরীক্ষা করছেন। অ্যানোডোনটিয়া একটি বিরল জিনগত রোগ যা শিশুর দাঁত এবং প্রাপ্তবয়স্কদের দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। প্রাথমিকভাবে এই চিকিত্সা অল্পবয়সী শিশুদের জন্য করা হবে, কিন্তু গবেষকরা মনে করেন পরবর্তী ক্ষেত্রে যাদের সাধারণ দাঁতের বেশ সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
ইউএসএজি-1 নামক একটি নির্দিষ্ট জিন ও ইঁদুরের দাঁত বৃদ্ধির সীমাবদ্ধতার মধ্যে গবেষকরা একটি যোগসূত্র পেয়েছেন। তারপর তারা পরীক্ষায় ইউএসএজি-1-এর অভিব্যক্তিকে ব্লক করার চেষ্টা করেছিলেন। এরজন্য তারা একটি অ্যান্টিবডি আবিষ্কৃত করেছেন যাতে ইউএসএজি-1-এর কিছু ক্রিয়া আটকে রেখে ইঁদুর এবং ফেরেটের দাঁতের বৃদ্ধি ঘটানো গেছে। এই পরীক্ষায় প্রাণীগুলো নিরাপদ ছিল, আর অ্যান্টিবডির বিশেষ কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। তারা জানিয়েছেন, হাড়ের মরফোজেনেটিক প্রোটিন (BMP) সিগন্যালিং নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দাঁতের বৃদ্ধি প্রাকৃতিক উপায়ে হয়েছে। স্টেম সেলের কোনো জটিল প্রকৌশল ছাড়াই শরীর স্বাভাবিকভাবে কাজ করেছে। এর সফলতার পরে তারা দেখবেন মানুষের ক্ষেত্রে এই রাসায়নিক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিনা। তারা আরো জানিয়েছেন, বায়োমার্কার হিসেবে মাস স্পেক্ট্রোমেট্রি ব্যবহার করে বোঝা যাবে, কোন ব্যক্তিরা দাঁতের ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাবেন। যদি বিষয়টি সফল হয় তাহলে দুধের দাঁত, প্রাপ্তবয়স্ক দাঁতের পাশাপশি ভবিষ্যতে তৃতীয় এক ধরনের দাঁত দেখার সম্ভাবনাও থাকবে।