পারসিড উল্কা বৃষ্টি, এই স্বর্গীয় ঘটনার জন্য সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ আকাশ পর্যবেক্ষক বা স্কাইওয়ার্চার অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। রাতের আকাশে প্রতি বছর এই সময় অর্থাৎ আগস্ট মাসে এই উল্কাবৃষ্টি দেখতে পায় পৃথিবীর মানুষ। এ বছর ১২ ই আগস্ট, শনিবার রাতের আগে থেকেই উল্কাবৃষ্টি শুরু হবে এবং ১৩ই আগস্ট, রবিবার ভোরের আগে সব চেয়ে বেশি পরিমাণে উল্কাবৃষ্টি ঘটবে – এমন কথাই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। অন্ধকারে পর্যবেক্ষকরা এই উল্কাবৃষ্টি আরও ভালোভাবে দেখতে পাবেন, প্রতি মিনিটে একটি উল্কাপাত ঘটবে।
১৯৯২ সালে ধূমকেতু সুইফ্ট-টাটল পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে চলে গিয়েছিল। সূর্যের চারপাশে ধূমকেতুর কক্ষপথে এই বরফ ও পাথরের ছোটো ছোটো টুকরো ছড়ানো রয়েছে।পৃথিবী প্রতি বছর আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে এই ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে যায়। পৃথিবী যখন এই ধ্বংসস্তূপ অতিক্রম করে তখন এই পারসিড উল্কা বৃষ্টির সৃষ্টি হয়৷ ১১-১২ আগস্ট যখন পৃথিবী সবচেয়ে ঘন এবং ধুলা ভরা পথের মধ্য দিয়ে যায় তখন পারসিড উল্কা বৃষ্টির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। যে বছর চাঁদের আলো কম থাকে সে সময় প্রতি ঘণ্টায় বেশি করে উল্কাপাত দেখতে পাওয়া যায়। ২০১৬ সালে প্রতি ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ২০০টি উল্কাপাত ঘটতে দেখা গেছে। একটি সাধারণ পারসিড মেটিওরোয়েড ঘণ্টায় ২১৪,৩৬৫ কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আঘাত করে জ্বলে ওঠে, তখন এটিকে শুটিং স্টার বা উল্কা বলে। প্রায় সব পারসিডই ছোটো, বালির দানার আকারের। বেশিরভাগ টুকরোই মাটিতে আঘাত করে না, তবে যদি কোনো একটি করে তখন তাকে উল্কাপিণ্ড বলে। পারসিডের তাপমাত্রা ১৬৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি কারণ প্রতিটি খণ্ড বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় সামনের বাতাসকে সংকুচিত করে এবং উত্তপ্ত করে। টুকরোগুলো মাটি থেকে প্রায় ৬০ মাইল ওপরে দৃশ্যমান। কিন্তু মনে রাখতে হবে পারসিড উল্কা বৃষ্টি কখনই মেঘলা আকাশে বা চাঁদের অতিরিক্ত আলোতে দেখতে পাওয়া যাবে না।