প্রথমবার বিশ্বের জটিল বহুকোশী জীবনের প্রাচীনতম জীবাশ্ম থেকে নির্দিষ্টভাবে কিছু তারিখ নির্ধারণ করা গেছে, যা পৃথিবীর ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তকে বুঝতে সাহায্য করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে ৪ বিলিয়ন বছর যাবত এককোশী জীবাণু ধারণ করার পর সমুদ্রে নতুন প্রাণের রূপ দেখা গিয়েছিল।
কার্টিন স্কুল অফ আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সেস-এর গবেষকরা ভূতাত্ত্বিক ক্রমানুসারে ফসিলের বয়স নির্ধারণ করার জন্য আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের স্তর পর্যবেক্ষণ করেছেন। ওয়েলসের কোএড কোচিওন কোয়্যারি ব্রিটেনের অগভীর সমুদ্র, সামুদ্রিক জীবের ভাণ্ডার। এখানে গবেষকরা প্রাচীন আগ্নেয়গিরির ছাই ধ্বংসাবশেষ যা প্রাণীদের আবৃত করে রেখেছিল, তার থেকে জীবাশ্মের সঠিক তারিখ চিহ্নিত করতে পেরেছেন, যা ৫৬৫ মিলিয়ন বছর পুরোনো।
পৃথিবী যখন বরফ যুগ থেকে বেরিয়ে এসেছিল, তখন প্রাণ বিকশিত হয়েছিল, সেই সমস্ত প্রাণীর অস্ট্রেলিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অনুরূপ এডিয়াকারান জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। ওয়েলসের এই জীবাশ্মগুলোর ডেটিং থেকে এগুলো একটি প্রাচীন জীবিত সম্প্রদায়ের অংশ হিসাবে চিহ্নিত করা গেছে। এর মধ্যে কিছু প্রাণী সামুদ্রিক প্রজাতি জেলিফিশ সদৃশ, আবার কিছু অপরিচিত ও অন্যরকম দেখতে, যেমন ফার্নের মতো, বা বাঁধাকপির মতো, বা কোনোটা সি-পেনের মতো। অস্ট্রেলিয়ার এডিয়াকারা পাহাড়ে প্রথম দেখা গেছে বলে এই জীবাশ্মগুলো এডিয়াকারান নামে পরিচিত। এই ওয়েলশ জীবাশ্মগুলি দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এডিয়াকারার বিখ্যাত জীবাশ্মগুলির সাথে তুলনীয়। ডিস্ক-আকৃতির অ্যাসপিডেলা টেরানোভিকার মতো প্রাণী সহ জীবাশ্মগুলো, বৃহৎ আকারের বহুকোশী জীবের প্রমাণ দেয়,র যা পৃথিবীর প্রাণের ইতিহাসে একটি রূপান্তরকারী মুহূর্ত।
এডিয়াকারান জীবাশ্মগুলো বিশ্বব্যাপী হিমবাহ গলার পর জীবনের প্রতিক্রিয়ার রেকর্ড, যা ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া এবং জীববিজ্ঞানের মধ্যে গভীর সংযোগ প্রকাশ করে। গবেষকরা জানিয়েছেন, এই গবেষণা পৃথিবীর অতীতের রহস্য উন্মোচন করার জন্য এই প্রাচীন বাস্তুতন্ত্রগুলি বোঝার গুরুত্ব প্রকাশ করে, যা জীবনের বিবর্তন বুঝতে সাহায্য করবে।