চাঁদের পৃষ্ঠের নীচে বড়ো গ্রানাইটের চাঙড় পাওয়া গেছে, যা গলিত লাভা জমে সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে ৩.৫ বিলিয়ন বছর আগে আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা নির্গত হয়ে, এই গ্রানাইটের সৃষ্টি। গ্রানাইট হল বিলুপ্ত আগ্নেয়গিরির নীচে অবস্থিত আগ্নেয় শিলার অবশিষ্টাংশ। লাভা বিস্ফোরিত না হয়ে ঠাণ্ডা হলে গ্রানাইটের গঠন বাথোলিথ নামে পরিচিত হয়ে থাকে।
প্ল্যানেটারি সায়েন্স ইনস্টিটিউটের এসএমইউ গবেষণার অধ্যাপক এবং বিজ্ঞানী ম্যাথিউ সিগলারের নেতৃত্বে বিজ্ঞানীদের একটা দল নেচারে একটা গবেষণা প্রকাশ করেছেন যেখানে তারা মাইক্রোওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি তথ্য ব্যবহার করে আগ্নেয়গিরি মনে করা হচ্ছে, বেলকোভিচ কম্পটন নামে পরিচিত এরকম একটা চাঁদের পাহাড়ের পৃষ্ঠতলের নীচের তাপ পরিমাপ করেছেন। দলটি তথ্য ব্যবহার করে নির্ধারণ করেছেন যে বেলকোভিচ কম্পটনের পৃষ্ঠের নীচে উত্পন্ন তাপ তেজস্ক্রিয় উপাদান থেকে আসছে যা শুধুমাত্র গ্রানাইট হিসাবে বিদ্যমান থাকতে পারে। চাঁদের এই বাথোলিথ এমন একটা অঞ্চলে অবস্থিত যা আগে আগ্নেয়গিরির এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এর আনুমানিক ব্যাস ৫০ কিলোমিটার যে আকার দেখে গবেষকরা বেশ অবাক হয়েছেন।
গ্রানাইট পৃথিবীতে বেশ সাধারণ একটা পদার্থ, যা সাধারণত জল এবং টেকটোনিক প্লেটের চলনে গঠিত হয়। এই টেকটোনিক প্লেট পৃথিবীর পৃষ্ঠেতলের নীচে বড় গলিত বস্তু তৈরি করতে সহায়তা করে। কিন্তু, চাঁদে গ্রানাইট অত্যন্ত বিরল, কারণ সেখানে গ্রানাইট গঠনের এই প্রক্রিয়াগুলির অভাব রয়েছে। এই যে গ্রানাইট খুঁজে পাওয়া গেল, তা এটা ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করবে যে কীভাবে প্রাথমিকস্তরে চাঁদে ভূত্বক গঠিত হয়েছিল।
সিগলার জানিয়েছেন, যদি জল না থাকে তবে গ্রানাইট তৈরি করতে চরম পরিস্থিতি প্রয়োজন, চাঁদে জল নেই, এবং টেকটোনিক প্লেট নেই — কিন্তু গ্রানাইট পাওয়া যাচ্ছে৷
এখান থেকে যে প্রশ্ন উঠে আসছে, তা হল চাঁদে কী কোনো সময়ে জল ছিল? নাকি তীব্র উষ্ণতার জন্য এই গ্রানাইট গঠিত হয়েছে?