বাচ্চা থেকে বুড়ো চকলেট খেতে ভালোবাসেনা এমন মানুষ খুব কমই আছেন। এহেন উচ্চ ফ্যাট চিনিযুক্ত সুখাদ্যটি আবার বেশি খাওয়া ভালো নয়। কিন্তু অল্প পরিমাণে চকলেট খাওয়া কি সত্যিই ভালো? নানা গবেষণা বলছে সঠিক পরিস্থিতিতেঅল্প মাত্রায় চকলেট খাওয়া হৃদপিণ্ড বা মানসিক অবস্থার জন্য ভালো। চকলেটের মধ্যে থাকা কোকো হল এক বিস্ময় ওষুধ। এর মধ্যে এমন কিছু সক্রিয় যৌগ থাকে যাদের ওষুধের মতো প্রভাব দেখা যায়।
এই যৌগগুলোর মধ্যে একটা হল থিয়োব্রোমিন, যা চা-তেও পাওয়া যায়, চায়ের তিক্ত স্বাদের জন্য এটা দায়ী। চা ও চকলেটে ক্যাফেইন থাকে যে রাসায়নিকের পিউরিন ফ্যামিলির সাথে থিয়োব্রোমিনের যোগসূত্র আছে। এই রাসায়নিকগুলো চকলেট খাওয়ার আকর্ষণের জন্য দায়ী। এই যৌগগুলো ব্লাড- ব্রেন ব্যরিয়ার-এর বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম। ব্লাড- ব্রেন ব্যরিয়ার হল মস্তিষ্কের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, যা টক্সিন, ব্যাকটেরিয়ার মতো ক্ষতিকারক পদার্থদের সূক্ষ্ম স্নায়ু কলাতে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। চকলেটে থাকা এই যৌগগুলো ব্লাড- ব্রেন ব্যরিয়ার অতিক্রম করে মানসিক উদ্দীপনা জাগায়, মুড, আচরণ, চিন্তা ভাবনা, অনুভূতি পরিবর্তন করে, শক্তি বাড়ায়।
এছড়াও বহু বছর যাবত চকলেট ওষুধ হিসেবে রক্তাল্পতা, যক্ষা, গাউটের মতো অসুখে ব্যবহৃত হয়। চকলেটের কোকো রক্তসংবহনতন্ত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটা এন্ডোথেলিয়াল অকার্যকারিতা রোধ করে, এই অসুখে ধমনী শক্ত হয়ে তাতে মেদের পরত জমে। এর থেকে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হতে পারে। ডার্ক চকলেট রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। কোনো কোনো গবেষণা বলছে, ডার্ক চকলেট হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতেও সাহায্য করে। আবার চকলেটে থাকা উদ্ভিজ্জ পলিফেনল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
এতো গুণ থাকলেও চকলেট কিন্তু কুকুরের মতো প্রাণীর পক্ষে বিপজ্জনক, তাদের কাছে এট বিষবৎ। ডার্ক চকলেটে থেকে তাদের পেশি শক্ত হয়ে যেতে পারে, খিঁচুনি হতে পারে। এমনকি বেশি খেলে কোমা হয়ে যেতে পারে, হার্ট রেট অস্বাভাবিক বা ক্ষতিকর হওয়ার সম্ভাবনা। তাই কখনও পোষা কুকুরকে চকলেট দেবেন না। আর চকলেটে থাকা অক্সালেট মানুষের পক্ষেও ক্ষতিকারক, এর থেকে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাহলে কি ধরনের চকলেট খাওয়া ভালো? দিনে ২০-৩০ গ্রাম ডার্ক চকলেটে যাতে সলিড কোকোর পরিমাণ বেশি আছে তা খাওয়া যেতে পারে।