১৫ই মার্চ দিনটি বিশ্ব ঘুম দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। বিজ্ঞানভাষের পাতায় ঘুমের গুরুত্ব নিয়ে আগেও নানা খবর বেরিয়েছে, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে রক্তচাপ বৃদ্ধি, হৃদরোগ হয়। বর্তমান নিবন্ধে ঘুমের সঙ্গে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সম্পর্ক জানানো হচ্ছে। জামা নেটওয়ার্ক ওপেন- এ উপাসালা ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে যে কম ঘুমের সঙ্গে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সম্পর্ক জড়িয়ে। টাইপ ২ ডায়াবেটিস শরীরে শর্করা প্রক্রিয়াজনিত করার ক্ষমতা প্রভাবিত করে, ইনসুলিন শোষণে বাধা দেয় যার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। ২০২০ সালে একটি প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে যে ৪৬২ মিলিয়নেরও বেশি লোক এই রোগে ভুগছে। সময়ের সাথে সাথে, এর জন্য স্নায়ু এবং রক্তনালীগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকে। যা বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এক ক্রমবর্ধমান সমস্যা।
পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, যে দিনে বারেবারে অল্প বিশ্রাম টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, আবার স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস যেমন নিয়মিত ফল এবং শাকসবজি খাওয়া এই রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। তবে, যারা খুব কম ঘুমোন তাদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর খাবার টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে কিনা তা জানার জন্য গবেষকরা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জনসংখ্যার তথ্যভাণ্ডার, ইউকে বায়োব্যাঙ্ক থেকে তথ্য নিয়েছেন। এতে ইউরোপের প্রায় অর্ধ মিলিয়ন অংশগ্রহণকারীদের জিনগতভাবে ম্যাপিং করা হয়েছে এবং তারা তাদের স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কিত নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তারা দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে অংশগ্রহণকারীদের তথ্য অনুসরণ করে দেখেন যে সাধারণত তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে যারা দৈনিক ঘুমোন তাদের ক্ষেত্রে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি ছিল।
যারা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি কম হলেও তারা যদি দিনে ছ ঘণ্টার কম ঘুমোন তাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সম্মত খাদ্য এই ঘুমের ঘাটতি জনিত ক্ষতি পূরণ করতে পারেনা, ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে যায়। গবেষকরা জানিয়েছেন যে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ না করে ঘুম যে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তার সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। প্রধান গবেষক ক্রিশ্চিয়ান বেনেডিক্ট জানান যে ঘুমের অভাবের প্রভাব ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন হয়, তা একজন ব্যক্তির জিনগত দিক ও তার শরীরে ঘুমের প্রকৃত চাহিদার ওপর নির্ভর করে।