হেমবতী নন্দন বহুগুনা গাড়ওয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা উত্তরাখণ্ডের গঙ্গা নদীতে দূষণের মাত্রা সনাক্ত করার জন্য একটি নতুন উপায় নিয়েছেন। তাদের মতে, সামুদ্রিক জীবেরর পেটে মাইক্রোপ্লাস্টিক, থার্মোকল এবং পোশাকের তন্তু পাওয়া যাচ্ছে, যাতে বোঝা যায় গঙ্গা ক্রমাগত দূষিত হচ্ছে, আর এই ধরনের মাছ খেলে মানুষের শরীরের ওপর খারাপ প্রভাব পড়বে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিমালয়ান জলজ জীববৈচিত্র্য বিভাগের প্রধান ডঃ চৌহানের নেতৃত্বে দেবপ্রয়াগ থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত গঙ্গা নদীর মাছের উপর একটা সমীক্ষা নেওয়া হয়েছে। গবেষক নেহা বাদোলা জানিয়েছেন, তারা সমগ্র অঞ্চলকে দুটো অঞ্চলে – দেবপ্রয়াগ থেকে ঋষিকেশ এবং ঋষিকেশ থেকে হরিদ্বারে ভাগ করেছেন। গঙ্গার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫২৫ কিলোমিটার, তাদের অধ্যয়ন উত্তরাখণ্ডের দেবপ্রয়াগ থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার প্রসারিত নদী ঘিরে। গবেষণায় দুটো অঞ্চলের তুলনামূলক অধ্যয়নের পরে, স্পষ্ট হয়ে গেছে যে এই সমস্যা হরিদ্বার এবং ঋষিকেশের মাছে বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তারা গঙ্গার দূষণের মাত্রাকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে বর্ণনা করে জানিয়েছেন প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্দিষ্ট নীতি প্রয়োজন।
ভারতের গাঙ্গেয় সমভূমিতে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য গঙ্গা মিষ্টি পানীয় জলের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ উৎস। দুর্ভাগ্যবশত, দেবপ্রয়াগ থেকে হরিদ্বারে নেওয়া নমুনায় মাছের পেটে যে প্লাস্টিক, কাপড়ের তন্তু এবং থার্মোকল পাওয়া গেছে; তা সঠিক আবর্জনা নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাব, গঙ্গা ও তার উপনদীতে আবর্জনা ফেলা এবং পর্যটনের নামে নদীর তীরে অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপের ফল বলে জানিয়েছেন নেহা বাদোলা।
মাছের মাধ্যমে গঙ্গায় দূষণ পরিমাপ করার জন্য বছরব্যাপী গবেষণার একটা সারসংক্ষেপ জানিয়ে বাদোলা বলেন, মাছের পেটে পাওয়া মাইক্রোপ্লাস্টিকের সংখ্যার সাথে তাদের দেহের দৈর্ঘ্য, ওজন এবং ভিসারাল ওজনের মধ্যে একটা সম্পর্ক দেখা গেছে, যদিও মাছের খাদ্যাভ্যাস এবং মাইক্রোপ্লাস্টিক জমার মধ্যে কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তিনি জানিয়েছেন, মানুষের এই মাছ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গবেষণার দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের নমামি গঙ্গে প্রকল্পের মহাব্যবস্থাপক আর কে জৈন জানিয়েছেন যে রাজ্যের মোট ৩২ টি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (এসটিপি) মধ্যে দুটি দেবপ্রয়াগে এবং পাঁচটি ঋষিকেশে স্থাপন করা হয়েছে, যা দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্রমাগত চালু রয়েছে।