২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী আমেরিকার অধিবাসীদের মধ্যে ৭০%-এরও বেশি এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ৫০%-এর রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি যা তাদের হার্টের রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ন্যাশেনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের এক সমীক্ষায় এমন কথাই উঠে এসেছে। কিছু ক্ষেত্রে, এর মাত্রা – বিশেষত এলডিএল কোলেস্টেরল, যাকে প্রায়ই “খারাপ কোলেস্টেরল” হিসাবে মনে করা হয় – প্লেক তৈরি করে এবং হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত এই সমীক্ষায় গবেষকরা দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে ২০০১- ২০০৩ এবং ২০২০-র সময়কালের মধ্যে ১৪০০ অংশগ্রহণকারীকে অনুসরণ করেছেন, যাদের বয়স ১৫-৩৯ বছর। সমীক্ষার শুরুতে, ১৫-১৯ বছর বয়সী ৫৫% অংশগ্রহণকারী, ২০-২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে ৭৪% এবং ৩০-৩৯ বছর বয়সীদের মধ্যে ৭৮% অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অস্বাভাবিক কোলেস্টেরলের মাত্রা ছিল। একজন ব্যক্তির কোলেস্টেরলের মাত্রা অস্বাভাবিক তখনই বলা যায় যখন তার মোট কোলেস্টেরল বেশি থাকে, বা এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকে, অথবা ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা মোটামুটি বেশি হয়; এইচডিএল কোলেস্টেরল কম থাকে অথবা যদি তাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করার ওষুধ খেতে হয়। প্রায় ৪০% অংশগ্রহণকারীদের উচ্চ এলডিএল মাত্রা ছিল (১০০মিগ্রা/ডেসিলি), প্রায় ৩%-এর খুব উচ্চ মাত্রা ছিল (১৬০মিগ্রা/ডেসিলি) এবং ২%-এর কম অংশগ্রহণকারীদের অনেক বেশি এলডিএল ছিল ও গবেষণার শুরুতে কোলেস্টেরল-নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ গ্রহণ করতে হত। গবেষণার শুরুতে, ১১৬৫ জন অংশগ্রহণকারীর ক্যারোটিড ধমনীর আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়েছিল। ক্যারোটিড ধমনী হৃদপিণ্ড থেকে মস্তিষ্কে রক্ত সংবহন করে। আনুমানিক ৬১ জনের অর্থাৎ ৫%-এর প্লেক প্রারম্ভিক স্তরে লক্ষ করা গিয়েছিল। প্লেক হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে বা অতিরিক্ত পরিমাণে ধমনীতে জমা হলে স্ট্রোক বা অস্ত্রোপচারের কারণ হতে পারে। বেসলাইন পরিমাপের প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পরে, ১৯ জন অংশগ্রহণকারী — যাদের শনাক্তযোগ্য প্লেক ছিল তাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের প্লেক আরও খারাপ হয়ে যায়। ১১০৪ জন, যাদের শুরুতে শনাক্তযোগ্য প্লেক ছিল না, তাদের মধ্যে ১০৯ জনের বা প্রায় ১০%-এর প্লেকের লক্ষণ ধরা পড়ে। গবেষকদের মতে এর কারণ হতে পারে উচ্চ মাত্রার এলডিএল কোলেস্টেরল, মোট কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য নন-এইচডিএল কোলেস্টেরল। অধ্যয়নের শেষে, প্রায় ১২৭ জন বা ৯% অংশগ্রহণকারী- হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, হার্ট ফেইলিওর, বা হার্ট সম্পর্কিত সার্জারি বা মৃত্যুর সম্মুখীন হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যাদের ডায়াবেটিস ছিল এবং অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকি ছিল, যেমন স্থূলত্ব, রক্তে উচ্চ মাত্রার শর্করা, উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইডস, উচ্চ রক্তচাপ, বা এইচডিএল কোলেস্টেরলের কম মাত্রা, তাদেরও কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল। তাই শুরু থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করে চিকিৎসকের পরামর্শে থাকা প্রয়োজন। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি বাড়তে দেওয়া যাবে না। কারণ কোলেস্টেরলের হাত ধরেই ঝুঁকি বাড়ে হৃদ্রোগের। হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমাতে কোলেস্টেরলের মাত্রা বশে রাখা জরুরি। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খাওয়াদাওয়াতেও জোর দিতে হবে। নিয়ম মেনে খাবার না খেলে কোলেস্টেরল বশে রাখা সহজ নয়।