মানুষের শরীরে এমন কিছু কোশ থাকে যেগুলো শেষের দিকে সংখ্যাবৃদ্ধি করা বন্ধ করে কিন্তু শেষ হয়ে যায় না বরং তারা রাসায়নিক নির্গত করে যা প্রদাহ বৃদ্ধি করে। এমনই একধরনের কলা – অস্টিওক্লাস্ট। অস্টিওক্লাস্ট, শরীরের প্রাকৃতিক হাড়ের পুনর্নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে হাড়ের কলাকে ভেঙে দেয় ও তার থেকে নির্গত খনিজ পদার্থ্য যেমন ক্যালসিয়ামকে রক্তে ফিরিয়ে দেয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এই কোশ আর সঠিকভাবে কাজ করে না, যার ফলে হাড়ের রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের সমস্যা হতে পারে। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষক দাউ প্যান ব্যাখ্যা করেন যে এই ধরনের কোশ বার্ধক্যজনিত পেশি ও হাড়ের রোগ যেমন অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে, এবং অবক্ষয়িত ভার্টিব্রাল ডিস্ক থেকে এই কোশ সরিয়ে দিলে ইন্টারভার্টেব্রাল ডিস্কের গঠন পুনরুদ্ধার করা যায়। গবেষকদের মতে অস্টিওক্লাস্ট প্রতিটি কশেরুকা এবং ডিস্কের মধ্যবর্তী প্লেটগুলোকে ছিদ্রযুক্ত করে তোলে, এবং নতুন স্নায়ুর অনুপ্রবেশে সাহায্য করে ফলে পিঠের নীচের অংশের ব্যথা বৃদ্ধি পায়। এই গবেষণায়, তারা পরীক্ষা করার চেষ্টা করেন যে এই ধরনের কোশ অস্টিওক্লাস্টের একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর দ্বারা সৃষ্ট কিনা এবং এই অস্টিওক্লাস্টগুলোক নির্মূল করলে ব্যথা হ্রাস পায় কিনা। গবেষকরা ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে দেখেন যে নেভিটোক্ল্যাক্স নামক একটি ওষুধ, এই ধরনের অস্টিওক্লাস্টগুলো দূর করতে পারে এবং মেরুদণ্ডের অতি সংবেদনশীলতা হ্রাস করে এবং কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মেরুদণ্ডের স্ক্যান এবং হাড়ের কলার মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষা নিশ্চিত করেছে যে চিকিত্সা করা ইঁদুরগুলোতে শেষ প্লেটের মধ্যে অবক্ষয় এবং ছিদ্রতা হ্রাস পেয়েছে, পাশাপাশি তাদের মধ্যে ফাঁকও হ্রাস পেয়েছে। ফলত এটি স্পষ্ট যে অ্যান্টি-সেনেসেন্স ড্রাগটি বার্ধক্যজনিত মেরুদণ্ডের অবক্ষয় ও পুনর্নির্মাণ প্রতিরোধ করতে পারে। তারা আরও দেখেন যে বার্ধক্যজনিত কারণে বা আঘাতপ্রাপ্ত মেরুদণ্ডে, প্লেটের শেষ প্রান্তে নতুন হাড়ের কলার উত্পাদন হয় এবং এই ধরনের অস্টিওক্লাস্ট অপসারণ করলে প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়। পিঠের নিম্নাংশে ব্যথার চিকিৎসায় এই ধরনের ওষুধ ব্যবহার এক নতুন দিশা উন্মোচন করবে। গবেষণাটি ইলাইফ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।