কেরালায় এক দশক আগে, সুন্দর ময়ূর এক ঝলক দেখতে পাওয়া খুব ভাগ্যবান এবং বিরল বিষয় বলে বিবেচিত হত। কিন্তু ময়ূরের দর্শন এখন বেশ সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯৯৮ সাল থেকে বর্তমানে ময়ূরের সংখ্যা ১৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে। ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলি সহ ১৩ টা সংস্থার যৌথভাবে পাখিদের উপর পরিচালিত এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। ই-বার্ড সিস্টেমের মাধ্যমে পর্যবেক্ষকদের ৩০০০০ পাখি পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন করা হয়েছে। আগে কেরালায় ময়ূর, যেমন শুধুমাত্র ইদুক্কি, ওয়েনাড, পালাক্কাদ এবং ত্রিশুর জেলায় পাওয়া যেত, এখন সর্বত্র পাওয়া যায়।
ময়ূর সাধারণত শুষ্ক, পাথুরে এবং ঝোপঝাড় এলাকায় বাস করে। কেরালা এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি ওয়াইল্ডলাইফ ডিপার্টমেন্টের ডক্টর পিও নামির বলেছেন যে ময়ূরের বংশবিস্তার যে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে তার ইঙ্গিত। অর্থাৎ কেরালার জলবায়ু ক্রমশ শুষ্ক হয়ে উঠছে। ১৯৬৩ সালে ময়ূরকে জাতীয় পাখি হিসাবে ঘোষণা করা হয় এবং বন ও বন্যপ্রাণী আইন শক্তিশালী করার সাথে সাথে জীবন ধারনের পরিস্থিতি ময়ূরের জন্য অনুকূল হয়ে ওঠে। একটি সমীক্ষা অনুসারে, কেরালার ভূমি এলাকার ১৯ শতাংশ এখন ময়ূরের অনুকূল আবাসস্থল এবং ২০৫০ সাল নাগাদ এটি ৪০ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ধান এবং শাকসবজির মতো খাদ্য শস্যের প্রাচুর্য, শুষ্কতার সাথে ময়ূরের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। পরিবেশের পক্ষে আরেকটা হুমকি হল বন্য শুয়োরের সংখ্যাও বাড়ছে, কারণ রাজ্যের আইন অনুযায়ী এদের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করার উপায় নেই। যদিও ময়ূর খরা সৃষ্টির জন্য দায়ী নয়, কিন্তু তারা ফসল ধ্বংস করে যা ইতিমধ্যেই কৃষকদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে। তাদের ক্রমশ বিস্তার চাষ বাসের পক্ষে বেশ সমস্যাজনক হয়ে পড়ছে।