সব সময় না হলেও, বেশির ভাগ সময় ঘোড়া দাঁড়িয়ে ঘুমায়। এটা তাদের বনে-জঙ্গলে দল বেঁধে চরে বেড়ানোর সময়ের অভ্যাস। তখন তাদের সব সময় শত্রুর আক্রমণের ভয়ে থাকতে হতো। চার পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে ঘুমানোর সুবিধা হলো, বিপদ-আপদে চট করে ছুট দেওয়া যায়।
প্রশ্ন ওঠে, হরিণ বা ওই জাতীয় প্রাণীরও তো একই ভয় থাকে, কিন্তু তারা তো সে কারণে দাঁড়িয়ে ঘুমায় না। আসলে ওরাও হয়তো দাঁড়িয়ে ঘুমাত, যদি তাদের শরীরের কাঠামো ঘোড়ার মতো হতো।
ঘোড়ার শরীরের পেশির লিগামেন্ট ও টেন্ডনের বিন্যাস তাদের নিশ্চিন্তে দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিতে ও ঘুমাতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘোড়া দাঁড়িয়ে ঘুমালেও গভীর ঘুমের (আরইএম স্লিপ) সময় অনেক সময় তারা হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে বা একপাশ ফিরে শোয়। এ অবস্থায় অনেক সময় একটানা দুই থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমায়।
অনেক ক্ষেত্রে আস্তাবলে ঘোড়ার শোবার জন্য যথেষ্ট জায়গা থাকে না। এ অবস্থায় দেয়ালে হেলান দিয়ে তারা গভীর ঘুম ঘুমায়। কোনো কোনো প্রাণীবিদ মনে করেন, বছরের যে সময় বনে ঘোড়ার জন্য যথেষ্ট খাদ্য থাকে না, সে সময় দিন ও রাতে প্রায় সব সময় কিছু না কিছু চিবিয়ে খাওয়ার জন্য তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, আর তারই ফাঁকে ফাঁকে তারা ঘুমিয়ে নেয়।
ঘোড়ার পেশির লিগামেন্টের বিন্যাস তাদের নিশ্চিন্তে দাঁড়িয়ে ঘুমাতে সাহায্য করে
ঘোড়ার পেশির লিগামেন্টের বিন্যাস তাদের নিশ্চিন্তে দাঁড়িয়ে ঘুমাতে সাহায্য করেছবি: পিক্সাবে
গ্রীষ্মকালে পর্যাপ্ত খাবার পাওয়া গেলে ঘোড়ারা শুয়ে ঘুমানোর সুযোগ পেত। বুনো ঘোড়ার দল যখন ঘুমায়, তখন সবাই শুয়ে পড়লেও অন্তত একটি ঘোড়া দাঁড়িয়ে ঘুমায়, যে তাদের দলের নিরাপত্তার জন্য প্রহরীর ভূমিকা পালন করে।