আমেরিকান জার্নাল অফ কিডনি ডিজিজেস-এ প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, আখ এবং ধানের তুষের দহনে একটি বিষাক্ত পদার্থ নির্গত হতে পারে যা কৃষি শ্রমিকদের মধ্যে অদ্ভুত এক কিডনি রোগ সৃষ্টি করছে। মধ্য আমেরিকা, ভারত এবং শ্রীলঙ্কার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল সহ সারা বিশ্বে গরমে কৃষি শ্রমিকদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের একটি মহামারী দেখা যাচ্ছে। যদিও তাপ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের এই মহামারীতে প্রভাব রয়েছে, কিন্তু গবেষকরা আখের ছাই থেকে নির্গত ক্ষুদ্র সিলিকা কণা চিহ্নিত করেছেন যা দূষিত পানীয় জলের মাধ্যমে শ্বাস নেওয়া বা খাওয়ার সময় দীর্ঘস্থায়ী কিডনির ক্ষতি করে।
ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো আনশুটজ মেডিকেল ক্যাম্পাস এই রহস্যময় দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের মূল্যায়ন করার জন্য সান সালভাদরের হাসপাতাল রোজালেসের ডাক্তারদের সাথে কাজ করেছে। লেখকরা অন্যান্য পরিচিত কিডনি রোগের রোগীদের তুলনায় এই বিশেষ রোগে আক্রান্ত রোগীদের কিডনি টিস্যুতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি সিলিকা কণা খুঁজে পেয়েছেন। গবেষণায় বলা হয়েছে যে আখের ছাইয়ের সংস্পর্শে এই রোগটি হতে পারে, যার মধ্যে নিরাকার সিলিকা ন্যানো পার্টিকেল রয়েছে। এই প্রক্রিয়াটি যারা ধান ক্ষেতে কাজ করে তাদের ক্ষেত্রেও হতে পারে, কারণ ধানের তুষ পোড়ানোর ফলেও সিলিকাযুক্ত ছাই বের হতে পারে।
রিচার্ড জনসন, মেডিসিনের অধ্যাপক এবং সিনিয়র লেখক বলেছেন যদিও এই তথ্য প্রাথমিক, তবে এটা বলা যায় যে আখ পোড়ানো কেবল জলবায়ু পরিবর্তনে অবদান রাখছে না, পাশাপাশি এটি মহামারীতে প্রভাব বিস্তার করছে যা কৃষি শ্রমিকদের প্রভাবিত করছে। এই রোগটিকে প্রথম নতুন স্বীকৃত রোগ হিসাবে চিহ্নিত করা হয় যা বিশেষত উষ্ণ জলবায়ুর ফলে ঘটে। এখন বোঝা যাচ্ছে এর সাথে বিষাক্ত পদার্থও জড়িত। আশা করা যায়, এই কাজটি শ্রমিক এবং আখ ক্ষেতের সংলগ্ন বাসিন্দাদের মধ্যে এই রহস্যময় কিডনি রোগের বিকাশের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণ হিসাবে আখ পোড়ানোর কুফলের ওপর নজর দেওয়ার প্রচেষ্টাকে উত্সাহিত করবে। এই গবেষণা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো পরিচিত কারণগুলির সাথে কৃষিজাত দ্রব্য পোড়ানোর অনুশীলনের পুনর্মূল্যায়নের করবে।