অ্যাসটেরিক্স এবং তার বন্ধু ওবেলিক্সের গল্প আমাদের একটা জাদু ওষুধের সাথে পরিচয় করিয়েছে যা সুস্বাদ না হলেও নাটকীয়ভাবে শক্তি আর ফিটনেস বাড়ায়। ক্রীড়া পুষ্টি বিজ্ঞানীরা দীর্ঘকাল ধরে এই ধরনের বৈশিষ্ট্য সহ একটি যৌগ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
এখন সবাই মনোযোগ দিয়েছেন কিটোনের দিকে। এই বিশ্রী স্বাদের উচ্চ মূল্যের পানীয় ছোটো বোতলে পাওয়া যায়। অনেকে এটা নিষিদ্ধ করতেও বলেছেন। কিন্তু কিটোন কী?
ব্যায়ামের সময়, বিশ্রামের সময়, আমরা কার্বোহাইড্রেট এবং চর্বি ভেঙে প্রয়োজনীয় শক্তি পাই। যদিও বেশিরভাগ কোশ ও কলা চর্বি ব্যবহার করে শক্তি পেতে পারে, কিন্তু মস্তিষ্ক গ্লুকোজের উপর নির্ভর করে। শরীরে কার্বোহাইড্রেটের সঞ্চয় শেষ হয়ে গেলে, কঙ্কালতন্ত্রের সাথে যুক্ত পেশির প্রোটিন থেকে এবং চর্বি ভেঙে তার উপজাত থেকে সীমিত পরিমাণে গ্লুকোজ তৈরি হতে শুরু করে। কিন্তু দৈনিক মস্তিষ্কের ১০০ গ্রামের বেশি গ্লুকোজ প্রয়োজন হয়, যা এই প্রোটিন বা চর্বি থেকে পাওয়া যায়না।
যখন শরীর কম কার্বোহাইড্রেট পায়, তখন লিভার চর্বিকে কিটোন বডিতে রূপান্তর করতে শুরু করে, এই কিটোন মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের বিকল্প উৎস হিসেবে কাজ করে। কিটোন খাদ্য হিসেবে অন্যান্য কলাতেও ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন পেশি, এমনকি ব্যায়ামের সময় শরীরের জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
আজকাল কিটো ডায়েট বেশ জনপ্রিয়। এর পিছনে যে ধারণা আছে তা হল, যদি আমাদের খাদ্যে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ প্রতিদিন ৫০ গ্রামের কম হয়, তাহলে শরীর মস্তিষ্কের জ্বালানীর জন্য কিটোন বডি তৈরি করে এবং অন্যান্য কলা জ্বালানী হিসাবে চর্বির উপর নির্ভর করে। যদিও এই ধরনের খাদ্যাভ্যাস ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে, অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে খেলাধুলার সময় কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এটা বেশ দুর্বল। কারণ তীব্র ব্যায়ামের সময় শক্তি জোগানর জন্য কার্বোহাইড্রেট অপরিহার্য।
কার্বোহাইড্রেট এবং চর্বির মতো কিটোন শক্তির উত্স হতে পারে, তাই বিজ্ঞানীরা এমন পরিপূরক বানাতে আগ্রহী, যা কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ হ্রাস না করে রক্তে কিটোন বডির ঘনত্ব বাড়িয়ে তুলবে৷ কিন্তু এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে, এটা পাচনতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই কিটোনের মতো অন্য কোনো শক্তিবর্দ্ধক টনিকের খোঁজ বিজ্ঞানীরা এখনও করে চলেছেন। কিটোন নিয়ে এই খবর ৬ই জুলাই দ্য কনভারসেশন পত্রিকায়