অস্ট্রেলিয়ার এক মশার প্রজাতি রক্ত পান করার সেরা জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছে ব্যাঙের নাসারন্ধ্র। গবেষকরা ইথোলজি জার্নালে সম্প্রতি এক রিপোর্টে এই তথ্য জানিয়েছেন। ব্যাঙের নাসারন্ধ্রের পাতলা চামড়া ছিদ্র করে রক্ত পান করার সহজ পদ্ধতি বের করেছে মশারা। এই আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের ব্যাঙের রোগের সংক্রমণ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারে। জীববিজ্ঞানী জন গোল্ড অস্ট্রেলিয়ার কুরাগাং দ্বীপের পুকুরের ব্যাঙ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে নাকের ছিদ্রকারী পোকামাকড় আবিষ্কার করেছিলেন। ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত, গোল্ড যখন ব্যাঙেদের নিয়ে গবেষণা করছিলেন তিনি তখন মাঝে মাঝে ব্যাঙের মুখে মশা লক্ষ্য করেন। তিনি তার ছবিও তুলে রাখেন। গোল্ড সেই ছবি একত্রিত করে দেখার সময় লক্ষ্য করেন প্রতিটি রক্তচোষা ব্যাঙের নাকের ছিদ্রের চামড়া আক্রমণ করেছে। কিছু মশা ব্যাঙদের শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত শোষণ করে কিন্তু গোল্ডের নজরে পড়া মশা, মিমোমিয়া এলিগানস, উভচর, স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদের থেকে রক্ত শোষণ করে এবং ব্যাঙেদের ক্ষেত্রে তাদের রক্ত শোষণের কৌশলটি বেশ অভিনব। এই আচরণের ফলে ব্যাঙের গ্রাস এড়িয়ে তার নাকের ছিদ্রে মশারা লুকিয়ে যেতে পারে। নাসারন্ধ্রের ত্বক বিশেষত নরম এবং পাতলা, যা মশার পক্ষে ছিদ্র করা সহজ করে তোলে। তিনি আরও লক্ষ্য করেন যে নাকের ত্বকের পৃষ্ঠের কাছাকাছি রক্তনালীর ঘনত্ব সম্ভবত অনেক বেশি। কিন্তু জায়গাটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ কারণ ঠিক নাসারন্ধ্রের নীচে রয়েছে ব্যাঙেদের আঠালো জিভ। গোল্ড দেখেন যে কিছু মশা প্রথমে ব্যাঙের পিঠে অবতরণ করে তারপর তাদের নজর এড়িয়ে মাথার দিকে এগিয়ে যায়। গোল্ড এবং সহকর্মীদের পূর্ববর্তী কাজে দেখা গেছে যে মশা কাইট্রিড ছত্রাকের ভেক্টর, যা বিশ্বব্যাপী উভচরদের ক্ষেত্রে কাইট্রিডোমাইকোসিস নামে রোগের কারণ। তাই গবেষকদের মতে ব্যাঙের শরীরের কোন অংশ থেকে মশা রক্ত শোষণ করে তা নির্ধারণ করা বিজ্ঞানীদের ব্যাঙের ত্বকের উপরিভাগ জুড়ে সংক্রমণের বিস্তারকে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারে। মশা কীভাবে একাধিক ধরণের হোস্টকে লক্ষ্য করে এবং কামড়ায় তা নির্ধারণ, পশুদের মধ্যে রোগের সংক্রমণ বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গবেষকদের মতে এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ একটি মশা-জনিত রোগজীবাণু বা পরজীবী বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রাখে।