কয়েক দশক ধরে তোলা মহাকাশের নানা ছবি থেকে সৌরজগতে ১০০০-এরও বেশি মহাকাশীয় শিলা আবিষ্কৃত হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও নাগরিক বিজ্ঞানীদের সাহায্যে হাবল স্পেস টেলিস্কোপের ফটো আর্কাইভ থেকে এই গ্রহাণুগুলোর অস্তিত্ব উন্মোচন করা গেছে। নাসার তথ্য অনুসারে বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি মহাকাশীয় শিলা আবিষ্কার করেছেন, যার বেশিরভাগই মঙ্গল এবং বৃহস্পতির মধ্যবর্তী গ্রহাণু বেল্টে অবস্থিত। কিন্তু আরও লক্ষাধিক গ্রহাণু রয়েছে, যাদের এখনও আবিষ্কার করা বাকি। এই অবশিষ্ট মহাকাশ শিলাগুলি সম্ভবত সৌরজগতের খুব ছোটো শিলা এবং ক্ষীণতম তাই তাদের চিহ্নিত করা খুব কঠিন। অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স জার্নালে, গবেষকরা আর্কাইভাল হাবল ডেটা থেকে ১০৩১ টা গ্রহাণুর কথা জানিয়েছেন যাদের এখনও শ্রেণিভুক্ত করা যায়নি। হাজার হাজার নাগরিক বিজ্ঞানীর থেকে তথ্য নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-কে ক্ষুদ্র মহাকাশের শিলাগুলোর পেছনে আলোর ক্ষীণ রেখাগুলো চিহ্নিত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এই গ্রহাণুগুলো এলোমেলোভাবে বিক্ষিপ্ত অবস্থায় আবিষ্কৃত হলেও, তাদের অভিক্ষিপ্ত কক্ষপথ থেকে বোঝা যায় যে তারা বেশিরভাগই একক জনসংখ্যার অন্তর্গত, যা গবেষকদের কাছে বেশ মূল্যবান। এর থেকে গবেষকরা সৌরজগতের বিবর্তনীয় মডেলগুলো সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি পেতে পারেন। পৃথিবীর চারপাশে হাবল টেলিস্কোপ ঘোরার জন্য এটা দূরবর্তী ছায়াপথগুলির দীর্ঘ চিত্র নেয় যারা ফটো থেকে গ্রহাণুর সারি খুঁজে পাওয়া গেছে৷ গ্রহাণুগুলো এই জাতীয় ফটোতে দৃশ্যমান থাকে না কারণ এই মহাকাশীয় শিলা রাতের আকাশের অস্পষ্ট নক্ষত্রের চেয়ে লক্ষ লক্ষ গুণ বেশি ক্ষীণ। তবে গ্রহাণুর রেখাগুলো তাদের অনেক বেশি দৃশ্যমান করে তোলে যাতে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তাদের আকার এবং কক্ষপথের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তথ্য অনুমান করতে সক্ষম হন।
২০১৯ সাল থেকে ১১০০০ নাগরিক বিজ্ঞানী, যারা হাবল অ্যাস্টেরয়েড হান্টার নামে পরিচিত এই ছবিগুলো থেকে গ্রহাণুর রেখা খুঁজে চলেছেন। তারা না খুঁজলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নিজেদের এই ছবি থেকে খুঁজতে হত। গবেষকরা এইচএএইচ সদস্যদের হাবল চিত্রের গ্রুপ দিয়ে ফটোবোম্বিং মহাকাশীয় শিলাগুলো শনাক্ত করতে দিয়েছেন, তারপর তারা কীভাবে শনাক্ত করল তার তথ্যের ভিত্তি এআই-এর প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করেছেন। এরপর গবেষকরা ১৯ বছর ধরে নেওয়া ৩৭০০০ হাবল চিত্রের AI -এর মাধ্যমে র নতুন গ্রহাণুর সন্ধানে চিরুনিতল্লাশ চালিয়েছেন। এআই-এর সাহায্যে মোট ১৭০১ টা গ্রহাণু শনাক্ত করা গেছে, যার মধ্যে ১০৩১ টা প্রথম শনাক্ত করা গেল।