দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর ব্রিজওয়াটার আর দ্য সেভার্ন এসচুয়ারির মধ্যে ৪৩০ একরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এই এলাকার সাথে জুড়ে রয়েছে ইংল্যান্ডের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ভবিষ্যৎ। এখানেই বাস্তবায়িত হতে চলেছে ইংল্যান্ডের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প।
হিঙ্কলি পয়েন্ট সি। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নাম এমনই। পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে যে এগোচ্ছে সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে একটা ১০০ ফুট লম্বা টাওয়ার দেখলেই। দুটো নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের মধ্যে একটা। বহু বছরের পরিকল্পনার পর অবশেষে সত্যিকারের নির্মাণ শুরু হয়ে গিয়েছে।
ব্রিটেনের অন্যতম বড়ো পাওয়ার স্টেশন হতে চলেছে হিঙ্কলি পয়েন্ট সি। ধরা হচ্ছে, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৭% একাই বহন করবে এই পাওয়ার স্টেশন। ইতিমধ্যেই কর্মীসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০০০-এ। তাদের মধ্যে অনেকেই নির্মাণক্ষেত্রেই থেকে যাচ্ছেন। ঘর আর কাজের জায়গায় দিনের যেকোনো সময় যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের। বিপুল কর্মযজ্ঞে নিরন্তর সাহায্য করে যাচ্ছে অক্লান্ত বাস-পরিষেবা।
প্রোজেক্ট ডেলিভারি ডিরেক্টার নাইজেল ক্যান বলছেন, হিঙ্কলিতে সবকিছুই বৃহৎ মাত্রায় চলছে। পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম বাস পরিষেবা হিঙ্কলির পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণস্থলেই। নাইজেল মশকরা করে বলছেন, ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি ডিম, সসেজ আর বেকনও হিঙ্কলিতেই আসছে।
২০৫০ সালের মধ্যে দেশের সরকার ‘নেট জিরো’ অর্থাৎ কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। সেই লক্ষ্যেরই একটা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিঙ্কলির মতো পরিকাঠামো। জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার একবারে বন্ধ করতে বেশিরভাগ দেশের কাছেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ ছাড়া অন্য বিকল্প নেই। কিন্তু এই উৎপাদন কেন্দ্রগুলো চালু রাখতে খরচের অঙ্কটা নেহাত কম নয়। আর পরিকাঠামো নির্মাণের কাজটা বেশ সময়সাপেক্ষও বটে। বড়ো আকারের নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকটাও চিন্তায় রাখছে প্রশাসনকে। সাথে আছে পারমাণবিক বর্জ্যের ঝক্কি। অন্য অপ্রচলিত শক্তি যেমন বায়ুশক্তি বা সৌরশক্তির জন্যে পরিকাঠামো অনেক দ্রুত আর কম খরচে হতে পারে।