সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ১৬ সপ্তাহ ধরে আঙুর খাওয়ার ফলে বয়স্ক ব্যক্তিদের চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটেছে। বৈজ্ঞানিক জার্নাল ফুড অ্যান্ড ফাংশনে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে যে আঙুরের নিয়মিত সেবনের ফলে ম্যাকুলার পিগমেন্টের সঞ্চয় এবং চোখের স্বাস্থ্যের অন্যান্য বায়োমার্কারের উপর প্রভাব পড়ে। এই বিষয়ে এটি প্রথম মানুষের উপর করা গবেষণা, এবং এটি পূর্বের গবেষণার ফলাফলকে আরও শক্তিশালী করে যেখানে বলা হয়েছে রেটিনাল গঠন এবং কার্যকারিতা রক্ষা করার জন্য আঙুর খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। দেখা গেছে বয়স্ক মানুষদের চোখের রোগ এবং দৃষ্টি শক্তিজনিত সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। চোখের রোগের প্রধান ঝুঁকির কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে – অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং উচ্চ মাত্রার অকুলার অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন এন্ড প্রোডাক্ট (AGEs)। AGEs রেটিনার ভাস্কুলার উপাদানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, কোশের কার্যকারিতা নষ্ট করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করে চোখের অনেক সমস্যা তৈরি করে। খাদ্যতালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত উপাদান অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে এবং AGEs -এর গঠন বাধার সৃষ্টি করে। ফলে রেটিনার উপকার হয় যেমন ম্যাকুলার পিগমেন্ট অপটিক্যাল ডেনসিটির (MPOD) উন্নতি ঘটে। আঙুর হল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পলিফেনলের প্রাকৃতিক উৎস। এই নতুন গবেষণায়, ৩৪ জন ব্যক্তিকে ১৬ সপ্তাহ ধরে প্রায় দেড় কাপ পরিমাণ আঙুর খাওয়ানো হয়েছিল অথবা তারা ষোল সপ্তাহ ধরে একটি প্লাসিবো খেয়েছিলেন। যে সমস্ত ব্যক্তিরা প্লাসিবো সেবন করেছিলেন তাদের তুলনায় আঙুর খাওয়া ব্যক্তিদের ম্যাকুলার পিগমেন্ট অপটিক্যাল ডেনসিটির উন্নতি ঘটে এবং প্লাজমা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ক্ষমতা এবং মোট ফেনোলিক উপাদানে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটে। যে সব ব্যক্তিরা আঙুর সেবন করেনি তাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে ত্বকে ক্ষতিকারক AGE-র উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে। ডাঃ জুং ইউন কিমের মতানুসারে এই গবেষণায় প্রথম দেখা যায় যে আঙুর সেবন ব্যক্তিদের চোখের স্বাস্থ্যের উপর উপকারী প্রভাব ফেলে। ক্রমবর্ধমান বার্ধক্য জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখে এই বিষয়টি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। তিনি আরও বলেন যে আঙুর সহজে পাওয়া যায় এবং গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন মাত্র দেড় কাপ পরিমাণে আঙুর শরীরে উপকারী প্রভাব ফেলতে পারে।