পুরুষদের ক্যান্সারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রকোপ প্রস্টেট ক্যান্সার, যা সমস্ত ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ স্থান অধিকার করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৫০ বছর বয়সের পরে এই ক্যান্সারে হয় আর পুরুষদের বয়স বাড়তে থাকলে এই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। প্রস্টেট হল পুরুষদের পুংজননাঙ্গে একটা ছোটো আখরোট-আকৃতির গ্রন্থি যা সেমিনাল তরল তৈরি করে শুক্রাণুকে পুষ্ট করে এবং পরিবহন করতে সাহায্য করে। অনেক প্রস্টেট ক্যান্সার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং প্রস্টেট গ্রন্থির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, যেখানে তারা গুরুতর ক্ষতি নাও করতে পারে। কিছু ধরণের প্রস্টেট ক্যান্সার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় আর এর ন্যূনতম চিকিত্সার প্রয়োজন হতে পারে, তবে কিছু প্রকারের প্রস্টেট ক্যান্সার আক্রমণাত্মক এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ল্যানসেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দুই দশকে দরিদ্র দেশগুলোতে বার্ধক্যের শিকারের সংখ্যা ধনী দেশের বার্ধক্যে ভোগা মানুষের সাথে যুক্ত হওয়ার ফলে বিশ্বজুড়ে নতুন প্রস্টেট ক্যান্সারের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হবে। জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে এই মেডিকেল জার্নালের গবেষণায় বলা হয়েছে, বার্ষিক নতুন প্রস্টেট রোগীর সংখ্যা ২০২০ সালে ১.৪ মিলিয়ন থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে বেড়ে তা ২.৯ মিলিয়ন হবে। গবেষকরা সমীক্ষায় বলেছেন যে এই ক্যান্সারের বৃদ্ধি সারা বিশ্বজুড়ে মানুষের বর্ধিত আয়ু এবং বয়সের পিরামিডের পরিবর্তনের সাথে যুক্ত।
গবেষকরা জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য নীতিগুলো ফুসফুসের ক্যান্সার বা হৃদরোগের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে যেমন পরিবর্তন আনতে পারে তা প্রস্টেট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। কারণ এই ক্যান্সারের সঙ্গে বংশগত কারণ জড়িয়ে থাকে, যা বিশেষ নিয়ন্ত্রণযোগ্য নয়। তবে ওজনের সাথে এই ক্যান্সারের একটা যোগসূত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তবে তা প্রস্টেট ক্যান্সারের সরাসরি কারণ কিনা তা এখনও জানা যায়নি। গবেষকরা বলেছেন উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে মানুষকে আগে স্ক্রীনিং করতে উত্সাহিত করতে হবে কারণ কার্যকর চিকিত্সা হওয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায় এই রোগের শনাক্তকরণে প্রায়শই খুব দেরি হয়ে যায়।