প্রায়শই লোকেরা মজা করে বলে যে তাদের ওসিডি আছে, তারা অত্যধিক সংগঠিত বা পরিপাটি থাকে। ওসিডি একটা রোগ যাকে আমরা অবসেসিভ-কম্পালসিভ ডিসর্ডার বলে জানি। আসলে ওসিডি একটি গুরুতর ব্যাধি যেখানে রোগীর কিছু বদ্ধ সংস্কার থাকে , সে বরংবার চিন্তা করে, তার অযৌক্তিক কাজ করার অন্ধ তারণা থাকে, কোনো অবাঞ্ছিত বিষয়ে সে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে, কিছু মানসিক বা শারীরিক প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলকভাবে করতে থাকে। নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত এক নতুন গবেষণায়, বলা হয়েছে ওসিডি -তে আক্রান্ত মানুষের মস্তিষ্কের রাসায়নিক পদার্থে ভারসাম্যহীনতা দেখা যায় যাকে কেমিক্যাল ইমব্যালেনস বলে আর এর জন্য এক ভিন্ন এবং উন্নতমানের চিকিত্সা পদ্ধতি রয়েছে।
জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ মানুষের ওসিডি দেখা যায়। এর সূচনার গড় বয়স হল সাড়ে উনিশ বছর, অর্থাৎ শৈশব এবং কৈশোরে অনেক ক্ষেত্রেই এই ব্যাধি শনাক্ত করা যায় না। ন্যাশেনাল হেলথ সার্ভিস প্রস্তাবিত চিকিত্সার মধ্যে রয়েছে বৌদ্ধিক ব্যবহারিক আচরণের জন্য থেরাপি এবং সিলেকটিভ সেরোটোনিন রি-আপটেক ইনহিবিটরস (SSRIs) নামক অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধ, যা মস্তিষ্কের রাসায়নিক পদার্থ, সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু ওসিডি রোগীদের ৫০ শতাংশ SSRI-তে সম্পূর্ণভাবে সাড়া দেয় না – যার অর্থ তাদের উপসর্গ কিছুটা অব্যাহত থাকতে পারে এবং ক্লিনিকাল উন্নতি দেখা যাওয়ার আগে কমপক্ষে আট সপ্তাহ স্থায়ী চিকিত্সার প্রয়োজন হয়।
আরও কার্যকারী চিকিত্সার জন্য, ওসিডি আক্রান্ত রোগীদের মস্তিষ্কে রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্য বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছেন যে এর জন্য মস্তিষ্কের কিছু অঞ্চলে গ্লুটামেট এবং গামা-অ্যামিনোবুটারিক অ্যাসিড (গাবা) নামে এক রাসায়নিক বার্তাবাহক বা নিউরোট্রান্সমিটারের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দায়ী। গ্লুটামেট যেমন নিউরনের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ায়, গাবা নিউরাল যোগাযোগ কমায় বা বাধা দেয়। এই রাসায়নিক পদার্থগুলোর ভারসাম্যহীনতা তাই মস্তিষ্কের নিউরাল সার্কিটের মধ্যে যোগাযোগকে কমবেশি কঠিন করে তোলে যার জন্য বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়।