আজকাল মানুষ দিনের অনেকটা সময় ডিজিটাল ডিভাইস যেমন স্মার্ট ফোন, ট্যাবলেট প্রভৃতির দেখে ব্যয় করছে। যে সব শিশুরা নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত তারাও দেখা গেছে দীর্ঘ সময়ের জন্য স্ক্রিন ব্যবহার করে। এই সমস্যাটির কথা ভেবে, নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং হামামাতসু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা অটিজিম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার বা ASD এবং অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিজঅর্ডার বা ADHD-এর জেনেটিক সংবেদনশীলতা নির্ধারণের জন্য ৪৩৭ জন শিশুর ডিএনএ-তে ৬.৫ মিলিয়ন পলিমরফিজম পরীক্ষা করেছেন। এরপরে, তারা একটি জেনেটিক ঝুঁকি সূচক গণনা করে যা ASD/ADHD সম্পর্কিত জিনের পরিবর্তনের প্রভাবের সংখ্যা এবং আকার বিবেচনা করে। এটিকে “পলিজেনিক রিস্ক স্কোর” হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গবেষকরা তারপরে এটিকে ১৮, ৩২, ৪০ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে স্ক্রিন ডিভাইস ব্যবহার করে ব্যয় করা সময়ের সাথে তুলনা করেছেন। পরীক্ষায় দেখা গেছে যে সব শিশুদের ASD-এর প্রতি জেনেটিক সংবেদনশীলতা বেশি রয়েছে তারা শৈশব থেকেই দিনে প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা স্ক্রিন ব্যবহার করে। এমনকি যে শিশুদের ADHD এর জেনেটিক ঝুঁকি বেশি তাদের বড়ো হওয়ার সাথে সাথে স্ক্রিন দেখার সময়ও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ নাগাহাইড তাকাহাশির মতে যদিও শৈশবে দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল দেখা ASD/ADHD এর কারণ বলে ভাবা হয়েছে, কিন্তু এই গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায় যে কিছু শিশুর ASD-র কারণে স্ক্রিন ব্যবহার করার জিনগত স্বভাব রয়েছে। অতিরিক্ত স্ক্রিন দেখা বা স্ক্রিন টাইম ASD-র প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে, কারণ ASD আক্রান্ত শিশুরা প্রায়শই মানুষের চেয়ে বস্তুর প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়। তাকাহাশি, ADHD আক্রান্ত শিশুদের অতিরিক্ত স্মার্ট ফোন বা ট্যাবলেট দেখার বিরুদ্ধে তাদের বাবা-মা বা তাদের দেখাশোনা করা ব্যক্তিদের সচেতন করেন। এই সব শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের ব্যস্ত রাখার জন্য অভিভাবকদের অন্য পদ্ধতি ভাবতে হবে এবং মোবাইল দেখার বিষয়টি সমস্যায় পরিণত হওয়ার আগে এর থেকে বেরিয়ে আসার উপায় নির্ধারণ করতে হবে।